বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি: , আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২ , আজকের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

প্রতিবন্ধীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও আবেদন পএ ডাস্টবিনে ফেললেন বেতাগীর আরএমও

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ

বরগুনার বেতাগীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসারের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী সনাক্তকরণ আবেদন ফরমে ডাষ্টবিনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় প্রতিবন্ধী সনাক্তকরণ আবেদন ফরমে উপজেলার বিভিন্নস্থান থেকে আসা প্রতিবন্ধীরা হাসপাতালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু বক্কর সিদ্দিকের স্বাক্ষর করাতে গেলে তিনি স্বাক্ষর না না দিয়ে ৪৫টি ফরম ধুমড়ে মুছড়ে ডাষ্টবিনে ফেলে দিয়েছেন। এ সময় তাদের অকথ্য ভাষায় গালি গালাস করেন। দুপুরে প্রতিবন্ধীরা ডাষ্টবিন থেকে কুড়িয়ে আনা ফরমসহ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউএনও’র সাথে দেখা করে এর বিচার দাবী করেন।

এর আগে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অফিসিয়ালভাবে লোক মারফত প্রতিবন্ধী সনাক্তকরণ আবেদন ফরমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও’র স্বাক্ষর আনার জন্য ফরম গুলো তাঁর দপ্তরে পাঠানো হয়। এ সমায়ে নিয়ম অনুয়ায়ী প্রতিবন্ধীরাও আরএমও’র সামনে উপস্থিত হয়। আরএমও ডা. আবু বক্কর সিদ্দিক উক্ত ফরম এবং প্রতিবন্ধীদের দেখে রাগন্বিত হয়ে যায় এবং প্রতিবন্ধীদের সাথে অকথ্য ভাষায় গালি গালাস করেন। এক পর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের সামনেই স্বাক্ষর না করে ফরমগুলে ধুমড়ে মুছড়ে তার টেবিলের পাশে রাখা ডাষ্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেয়। এত প্রতিবন্ধীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ডাষ্টবিন থেকে ফরমগুলো কুড়িয়ে এনে উপজেলা চেয়ারমান মো. মাকুসুদুর রহমান ফোরকান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন’র সাথে দেখা করে ঘটনার বিচার দাবী করেন। তাৎক্ষনিকভাবে উভয়ই বরগুনা সিভিল সার্জনকে বিষয়টি অবহিত করেন।
এ বিষযে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। নীতিমালা অনুযায়ী যারা প্রতিবন্ধী তাদের ফরমে স্বাক্ষর করেছি। আর প্রতিবন্ধী নয় তাদের ফরম রেখে দিয়েছি। আমি কারো সাথে খারাপ আচরণ করিনি।

স্বাক্ষর নিতে আসা বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের ফজিলা বেগম বলেন, আমরা ডাক্তারের কক্ষে ঢুকলেই তিনি আমাদের খারাপ ভাষায় গালি গালাস করে ফরমে স্বাক্ষর না দিয়ে ফরমগুলো ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. মাসুম বিল্লা বলেন, যদি কোন কোন ব্যাক্তি প্রতিবন্ধী না হয় তাহলে ফরমে তা উল্লেখ করে স্বাক্ষর দিতে পারতেন। তাহলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। আমার দপ্তরের সরকারি ফরম ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া সমিচিন হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ নিয়ে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, প্রতিবন্ধীদের সাথে এ ধরনের আচরণ করা মোটেও উচিত হয়নি। সরকারী ফরম ডাস্টবিনে ফেলা দিয়ে তিনি অন্যায় করেছেন। একজন ডাক্তার হিসাবে তার আচরণ আরও নমনীয় হলে ভাল হতো।

বরগুনা সিভিল সার্জন মো. ফজলুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাটি জেনেছি। এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।