২০২৪ সালের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ২০২৩ এর পরে ২০২৪ এর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি আজ সেই নির্বাচনে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে আপনারা অওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিলেন। বৃথা যায়নি। ২৯টা প্রকল্প উদ্বোধন ও ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। করোনাকালেও অনেক প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। আমার মনটা সর্বদা আপনাদের কাছে পড়ে থাকে।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। ভূমিহীন থাকবে না। অশিক্ষিত থাকবে না। একটি মানুষও গৃহহীন থাকলে আমাকে জানাবেন। আমি ব্যবস্থা করে দেব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার পরে লবণ চাষিদের উন্নয়ন করেছি। ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির জন্য কাজ করছি। ভবিষ্যতে বিদেশে লবণ রপ্তানির ব্যবস্থা নেব। খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিদেশিরা দেখার মতো একটি আকর্ষণীয় শুঁটকি বাজার তৈরি করে দেব।
শেখ হাসিনা বলেন, এখানে চিংড়ি উৎপাদনের প্রথম উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ। সিলেটসহ বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার সাথে বিমান যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কক্সবাজারবাসীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হবে।
ক্রীড়ার উন্নয়নে আওয়ামী লীগের কৃতিত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজারে ফুটবল খেলার জন্য পূর্ণাঙ্গ ক্রীড়া কমপ্লেক্স করা হবে। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে আরও উন্নত করা হবে।
কক্সবাজারের মানুষ সবসময় তার হৃদয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পরিকল্পিত পর্যটন শহর করতে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছি। সময় আসবে সিঙ্গাপুর থেকে সুন্দর জায়গায় পরিণত হবে মহেশখালী। মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় আরও দুটি বিশেষ অঞ্চল করা হবে। উন্নয়নই হবে আমাদের সার্বক্ষণিক চিন্তাধারা।
জোট সরকারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জামায়াত-বিএনপি এ দেশের মানুষকে কী দিয়েছে? দুর্নীতি, পাচার ইত্যাদি তারা পারে। অস্ত্র চোরা কারবারে সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে নিয়ে রাজনীতি করতে চায় বিএনপি। বিএনপি মানুষ মারার দল। আগুন নিয়ে খেলা করে তারা। তারা কিছুই দেয়নি। সব লুটে খেয়েছে। মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। লেখাপড়া ধ্বংস করে দিয়েছিল। আমরা ৪৫ থেকে ৭৫ শতাংশ স্বাক্ষরতার হারে উন্নীত করেছি। গ্রামপর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা আমরাই দিয়েছি।
বাজার পরিস্থিতি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বে সব কিছুর দাম বেড়েছে। তারপরও মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সে ব্যবস্থা করতেছি। এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ আমরা। আপনারা যারা পারেন খালি জায়গা রাখবেন না। চাষবাস করবেন।
স্বাস্থ্য খাতে সরকারের সফলতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। কারো কাছ থেকে এক টাকাও নিইনি। এক কোটি মানুষকে স্বল্পমূল্যে চাল, ডাল, চিনি কেনার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। একটি মানুষও যাতে না খেয়ে মারা না যায়, সেই ব্যবস্থা করেছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বাবা-মা সব হারিয়েছি। আমার চাওয়া পাওয়া বলতে কিছুই নেই। কারো স্নেহ পাইনি। কাজেই আপনাদেরকেই আমার আপনজন মনে করি। যত দূরেই থাকেন, আপনারা আমার হৃদয়ে আছেন। কাছেই আছেন।
তিনি বলেন, দেশের প্রত্যেকটা গ্রামের লোকই শহরের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে। সে জন্য সড়কপথ, রেলপথ উন্নয়ন করে দিচ্ছি। আরও অনেক কাজ বাকি। তার জন্য আওয়ামী লীগকে আবারো ক্ষমতায় আনা দরকার।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ,, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ।