সরকারের সাশ্রয়ী নীতির ফলে কোনো-কোনো মন্ত্রণালয় বিদ্যুৎ খাতে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় কমিয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সচিব পর্যায়ের এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গত ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সচিবদের বৈঠকের ফলোআপ বৈঠক ছিল আজ। সেখানে সরকারের ব্যয় সংকোচন ইস্যুতে পর্যালোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ফাইনান্স যেটা বলছে, বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যয় সংকোচন সেখানে কেমন কমলো, বিদ্যুতে কেমন কমলো, পেট্রোল ব্যবহার কতটুকু কমলো—এই জিনিসগুলো আমরা রিভিউ করলাম। কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে দেখা যাচ্ছে গত জুন মাস থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুতের প্রায় ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় কমানো সম্ভব হয়েছে। এটা সবার কাছেই তুলে ধরা হলো এবং আদর্শ হিসেবে ধরে সবাই প্র্যাকটিস করছে।
আর্থিক মন্দা ইস্যুতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় তাদের প্রকল্পের ক্ষেত্রে যে ক্যাটাগরি করে দিয়েছে, তা কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে বিশেষ করে অর্থ সচিব অনুরোধ করেছেন, প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে। তাতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের জন্য ভালো হবে। যখন আমরা বৈদেশিক ঋণ নিই, তখন একটি বার্ষিক প্রজেকশন (প্রক্ষেপণ) দেখাতে হয়। যেমন এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আমাদের ৩০০ মিলিয়ন ডলার লাগবে, এখন আমরা যখন ৩০০ মিলিয়নের রিকুইজেশন দিয়ে দেই, তা খরচ করতে না পারলেও আমাদের ব্যবস্থাপনা খরচ কমে আসে।
তিনি বলেন, আমরা যদি ২০০ মিলিয়ন ডলারও খরচ করি, তখন ব্যবস্থাপনা খরচ দিতে হয় ৩০০ মিলিয়নেরই। যে কারণে অর্থসচিব ও আমি ব্যক্তিগতভাবে এদিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ করেছি। এখনো অর্থবছরের ছয় মাস হয়নি, কাজেই আগামী ছয় মাসের মধ্যে যেন এটা বাস্তবায়ন করতে পারি, এতে দুটি কাজ হবে। প্রথমত বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের একটা সমাধান হবে। খরচও বেশি হবে না।
খাদ্যের মজুত নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, আরেকটা জিনিস যেটা আলোচনা হয়েছে সেটা হচ্ছে খাদ্যের রিজার্ভ। সেটা আগামী জুন পর্যন্ত আমাদের যে প্রজেকশন দেখানো যাচ্ছে তাতে সব রকম ইয়ে করে খাদ্যে ঘাটতি হবে না, কারণ ১৬ লাখ টনেরও বেশি খাদ্য মজুত রয়েছে। সুতরাং এটা কমফোর্টেবল সিচুয়েশনে রয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন যে কর্মসূচি চলছে সেগুলো চলবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেমন ওএমএস কার্যক্রম, কম দামে খাদ্য দেওয়া সেগুলো চলবে। পাশাপাশি টিসিবি যে তিন-চারটি আইটেম দিচ্ছে সেটাও কমার্স সেক্রেটারি ইএনশিওর করেছেন যে, রোজা পর্যন্ত কোনো ঘাটতি হবে না, আরও পাইপলাইনে আছে। এগুলো মেইনলি আলোচনা হলো।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রায় ৫৮-৫৯ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন করেছি। এটার খাদ্যমূল্য আরও বেশি। আর গম আনারও চেষ্টা চলছে। খাদ্যসচিব নিশ্চিত করেছেন, আমরা গম আনছি।
ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরগুলো তারা দেখছেন বলল, কোনো অসুবিধা নেই। এ ইস্যুতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ ব্যাংক এটা ব্রিফ করে দেবে।
২৪ দফা নির্দেশনায় যে কোনো সংকটের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে, সেই সংকটটা কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়।