জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও কিশোরগঞ্জ-৩ (তাড়াইল-করিমগঞ্জ) আসনের সাংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে তারা কোথাও রাজনীতি করতে পারে না। আগামী নির্বাচনে জাপা ৩শ আসনে প্রার্থী দেবে। যদি কোন জটিল প্রশ্ন আসে তবে মুক্তিযোদ্ধের স্বপক্ষে কোন দলের সাথে জোট করতে পারি। কিন্তু যারা জামাতকে পেট্টুনাইজ করবে যারা রাজাকারদের পেট্টুনাইজ করবে যারা মুক্তিযোদ্ধের আদর্শকে সমন্বিত রাখবে না তাদেরকে জাতিয়পার্টি সাহায্য করবে না।
শুক্রবার ২৭ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বিকেল ৪ টায় মুজিবুল হক চুন্নু কর্তৃক উপজেলার সাতজন কমান্ডারসহ ২১৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতের চাদর উপহার বিতরণী অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা এখনো এ দেশে রাজনীতি করে। আর বিএনপি’র মতো একটি বড় দল সেই স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে নিয়েই রাজনীতি করে, তাদের দলেও স্থান দেয়। তখন ছয় দফার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে বাঙালির মনন তৈরির উদ্দেশ্যেই ১৯৬৬ সালে ৬ দফা ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফার মাধ্যমে বাঙালির মুক্তির সনদ ঘোষণা স্বাধীনতার পথে এক অনন্য সোপান। বাঙালির মুক্তির সনদ হিসেবে ৬ দফার ভিত্তিতে মানুষ আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছে, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও পরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনের পর যখন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি, তারপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছেন। দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধু জানতেন কখন কোনটা জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে। এ সময় ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে মহাসচিব চুুন্নু বলেন, বঙ্গবন্ধু অনেক আগেই স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই যখন তিনি অনুভব করলেন এই পাকিস্তান রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে বাঙালির কোনো দিন মুক্তি আসবে না, তখনই তিনি এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ফলে সাধারণ মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাই প্রয়োজনে উন্নয়নের কাজ কম করে জিনিপত্রের দাম কমিয়ে মানুষকে সহনশীলভাবে চলার ব্যবস্থা করে দেন। আসছে রমজান মাসে যেন বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ঠিক থাকে। যেন মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করে মানুষ চলতে পারে সে দিকে সরকারের যেন নজর থাকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা শারমিন এর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম ভুঁইয়া শাহীন। অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আবদুল হাই, তাড়াইল থানা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার রফিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য একেএস জামান সম্রাট, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নার্গিস সুলতানা, উপজেলার জাওয়ার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক ভুঁইয়া রতন, দিগদাইড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম আসাদ, ধলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মবিন সহ উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকবৃন্দ।