এনামুল হক রাঙ্গা (বগুড়া প্রতিনিধি): , আপলোডের সময় : শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩ , আজকের সময় : শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

বগুড়ায় চরাঞ্চলে ভুট্রার বাম্পার ফলন, দামে খুশি কৃষক

বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনটের  চরাঞ্চলে এবার ভূট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দামও বেশ সন্তোষজনক । চাষ হয়েছে গত বছরের চাইতেও দ্বিগুণ। এবার ফলন ও দাম ভালো থাকায় ভূট্টা চাষ করে  এবার চাষীদের মুখে হাসির ঝিলিক ফুটেছে  । এ মৌসুমে শুধুমাত্র সারিয়াকান্দি উপজেলায়  ৭ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হবে। আর এ ভূট্টা ২৫৭ কোটি টাকায় বাজারে বিক্রি হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় চাষীদের বরাতে সারিয়াকান্দির চরের চাষীরা এ সময়ে বেশিভাগই মরিচ চাষ করতেন। তবে চাষাবাদে পরিবর্তন আনায় এ মৌসুমে ব্যাপকহারে চাষ হয়েছে ভূট্টার। গত বছর এ উপজেলার প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে ভূট্টার চাষ করা হয়েছিল । এবার সেখানে দ্বিগুন প্রায় ৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে এ চাষ করা হয়েছে। চালুয়াবাড়ী, কাজলা, বোহাইল, হাটশেরপুর, কর্ণিবাড়ী, চন্দনবাইশা ও সদর ইউনিয়নের চরের জমির আনাচে কানাচে চাষ করা হয়েছে ভুট্টার। কোনো কোনো চরের ভূট্টার ফসল ছাড়া কোন আবাদই চোখে পড়ছে না। চরগুলো ভূট্টার চরে পরিনত হয়েছে। যে দিকে তাকানো যায় কেবলই চোখে পড়ছে সবুজ ভূট্টার গাছ আবার কোনো জমিতে পাকা ভূট্টার মোচায় থরে থরে গাথা কেবলই সোনালী ভূট্টার দানা দেখা মিলেছে।

চাষীরা বলছেন, আগে ফসলাদি করে তেমন একটা লাভ থাকেনি। এ বছর ভূট্টার চাষ করে ফসলের লাভের মুখ দেখছি আমরা। বোহাইল  ইউনিয়নের ধারাবারিষা গ্রামের চাষী আলাউদ্দিন সরকার  বলেন, আবাদ করে লাভ না থাকায় জমি বর্গা দিয়ে সামান্য কিছু জমিতে অন্যান্য ফসলের চাষাবাদ করতাম, কিন্তু এবার চরের ২৫ বিঘা জমিতে ভূট্টার আবাদ করে ফলন ও দাম দুটোই ভালো পেয়েছি। ভূট্টা ফসলেই ভালো লাভের মুখ দেখছি। কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ছোনপাচা চরের চাষী ময়েজ উদ্দিন বলেন, ভূট্টা চাষে চরে অর্থনীতিতেএ বছর ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আমি ২৮ বিঘা জমিতে ভূট্টার চাষ করেছিলাম।

এ ফসলে পরিশ্রম কম কিন্তু খরচ হয়েছিল প্রতি বিঘায় ১০ হাজার টাকার মতো। এরই মধ্যেই ভূট্টা জমি থেকে কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন পাচ্ছি ৪০ থেকে ৫০ মণ ভূট্টা। বাজারে বিক্রি করছি প্রায় ১ হাজার ৩০০ টাকা মণ। আশা করছি  এ ফসলে ভালো লাভ থাকবে আমার।

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম  বলেন, এ মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় ভূট্টার ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দামও ভালো। চাষীদের উৎপাদিত ৭০ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন ভূট্টা বিক্রি করে ২৫৭ কোটি টাকা কৃষকের ঘরে উঠবে বলে আশা করছি আমরা। এ চাষের সাথে জড়িত রয়েছে প্রায় ২২ হাজার কৃষক।

ভূট্রার দাম বাজারে এমন আশানুরূপ থাকলে আগামীতে ভূট্রার চাষ আরো বেশি হবে বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম।