ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ রুটে চলাচলকারী দুটি ফেরি নষ্ট থাকায় লাখ লাখ টাকার তরমুজ ঘাটেই নষ্ট হচ্ছে। ফেরি সংকটের কারণে তিন-চার দিন ঘাটে অপেক্ষা করেও পারাপার হতে না পেরে লোকশানের মুখে পড়েছেন তরমুজ ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।
এদিকে ভোলার ইলিশা ও লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী রুটে চলাচলকারী ফেরি কলমীলতা এবং কুসুমকলি নামের দুটি ফেরি বেশ কয়েক দিন ধরে বন্ধ থাকায় ঘাটে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। গত কয়েক দিন আগে তিন ঘাটে অপেক্ষা করে পারাপার হতে না পাড়ায় ট্রাকে থাকা তরমুজ নষ্ট হওয়ায় তরমুজ রেখেই পালিয়ে গেছেন এক ব্যবসায়ী।
সরেজমিনে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাটে যাওয়ার জন্য ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে অর্ধশতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ফেরিঘাটের সড়কের দুই পাশে সিরিয়াল দিয়ে অপেক্ষা করছে। দুই তিন দিন ধরে পারাপার হতে না পেরে কাচামাল ও তরমুজের ট্রাকগুলোতে থাকা পণ্যগুলো থেকে পানি ঝড়ছে। ইলিশা ফেরিঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা তরমুজ চাষি আমির হোসেন জানান, ভোলার চরফ্যাশন থেকে ট্রাকে করে তিন হাজার তরমুজ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
গাড়িতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার তরমুজ রয়েছে। সঠিক সময় গন্তব্যে পৌঁছতে না পাড়লে গাড়িতে থাকা সব তরমুজ নষ্ট হয়ে যাবে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ রুট দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত করে। ২০০৬ সালের এপ্রিলে তিনটি ফেরি দিয়ে ভোলা সদর উপজেলা ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর ফেরি ঘাটটি চালু করে। এখন এ রুটে ছয়টি ফেরি চলাচল করলেও বেশ কয়েক দিন ধরে কলমীলতা ও কুসুমকলি নামের দুটি ফেরি নষ্ট রয়েছে। সেগুলোকে স্থানীয়ভাবে মেরামতে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডবি্লউটিসি) ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. পারভেজ খান জানান, কাচামালের গাড়িগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিরিয়ালে আগে দেওয়া হয়। তবে নাব্যতা সংকটে স্বাভাবিক গতিতে ফেরি চলাচল করতে পারছে না।
ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবার ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ মৌসুমে তাদের লক্ষমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ৩৮৩ হেক্টর জমিতে।