মনজুর মোরশেদ তুহিন (পটুয়াখালী প্রতিনিধি): , আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩ , আজকের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

বাউফলে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ইউএনও’র বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক জোর পূর্বক মালিকানা জমি দখল করে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের এবং আদালত কর্তৃক অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করা হয়। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দাবী করেন সরকারী খাস জমিতেই নির্মান কাজ চলছে, ব্যক্তিমালিকানাধীন কারো জমি দখল করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুস সালাম দাবী করেন, ‘ভুক্তভোগী মোঃ আঃ কাদের মুন্সী (৯৯) পিতা- মৃত: আঃ লতিফ মুন্সী, আঃ রশিদ মৃধা (৬০) পিতা- মৃত: হামেদ আলী মৃধা, হাজী আবদুস সালাম (৫৫) পিতা- আঃ কাদের মুন্সী, মোঃ শহিদ মুন্সি (৪০) পিতা- কাদের মুন্সী, মোসাঃ হাছিনা বেগম (৫০), পিতা-আঃ কাদের মুন্সী সহ আরো ১৪ জন পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের ছত্রকান্দা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি স্থানীয় ছত্রকান্দা মৌজা জেল নং-০৬, এস.এ খতিয়ান নং ৫৯, দাগ নং- ৪৩২, জমি ৫৩ শতাংশ। একই মৌজায় ২৬২নং খতিয়ানের ৪৩২/৮৪৫ নং দাগের জমি ২০ শতাংশ জমির একুনে ৭৩ শতাংশ জমির চৌহুদ্দি দেয়া আছে এবং এগুলো তাদের ভোগ দখলে রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের অবাসন প্রকল্প তৈরীর জন্য তাদের ব্যক্তিমালিকানধীন জমি দখল করে নির্মান কাজ শুরু করা হয়। ভোগ দখলী বসত বাড়ী পৈত্রিক সম্পত্তির রেইনট্রি, চাম্বুল, মেহগুনি সহ বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ-পালাকেটে বিক্রি করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। যার আনুমানিক মূল্য পাঁচ লক্ষ টাকা। এই ঘটনায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারী পটুয়াখালী আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ৪০/২০২৩।

আদালত মামলার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বাউফল সহকারী জজ আদালত সাত দিনের মধ্যে বিবাদীদের জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু বিবাদীরা বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অমান্য করে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে প্রবেশ করে গাছ-পালা কেটে বিক্রি করলে পুনরায় গত ২ মার্চ আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করলে আদালত অন্তবর্তী কালিন অস্থায়ী নিষেধাাজ্ঞা জারী করে। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারির পরও উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোর পূর্বক নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগী হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমাদের পৈত্রিক জমি অবৈধ ভাবে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে দখল করার প্রতিবাদ করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাকে অবৈধ ভাবে গ্রেফতার করে তিন মাসের সাজা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ২৯ মার্চ আদালত আমাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। বর্তমানে আমাদের সম্পত্তিতে জোড় পূর্বক ভাবে ঘর তোলা চলমান রয়েছে। আমরা আমাদের ন্যয্য জমি চাই।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আঃ রশিদ মৃধা বলেন, ‘ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার নিজেও জানে যে জমির মালিক আমরা আর পাশের জমি সরকারী। এর পরও তারা আমাদের জমি দখল করে কাজ করছে। যেহেতু পাশে পুকুর আছে সেটা ভরাট করতে তাদের বেশি খরচ হবে। এ কারনে আমাদের ভরাট করা জমিতে তারা ঘর নির্মান করছে।

এ ছাড়া সার্ভেয়ার কামরুল হাসান এবং ভূমি অফিসের তহসিলদার বাপ্পি বিষয়টি সমাধান করার জন্য ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে টাকা দাবী করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রশিদ মৃধা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-আমিন বলেন, সরকারী জমিতে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মান করা হচ্ছে। এখানে কারো ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ঘর তৈরী করা হচ্ছে না। আর আদালত যেই জমিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেখানে আমরা কাজ করছি না।

হাসিনা বেগম কে মোবাইল কোর্টে সাজা দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন,‘ সরকারী কাজে বাঁধাদানের আপরাধে তাকে তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছিল।’