সাব্বির আলম বাবু (নিজস্ব প্রতিবেদক): , আপলোডের সময় : শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩ , আজকের সময় : শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

ভোলায় সবজি চাষে দুবাই প্রবাসী হাফিজের সাফল্য।

বিদেশি সবজি ক্যাপসিকামসহ দেশি বিভিন্ন সবজি চাষ করে ভাগ্য বদলে ফেলেছেন ভোলার ইলিশা এলাকার প্রবাসী যুবক হাফিজ উদ্দিন হাফিজ। কৃষির প্রতি মমতা আর কঠোর পরিশ্রমে মাত্র পাঁচ বছরে হাফিজ উদ্দিন এখন এলাকায় সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। বেকার যুবকদের আইকন হয়ে উঠেছেন তিনি। অনেক যুবক তাকে দেখে কৃষি কাজে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

হাফিজ জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ৮ একর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে মূলধন উঠে এসেছে। মৌসুমের শেষে তিনি দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন। ক্যাপসিকাম ছাড়াও ছয় একর জমিতে চিচিঙ্গা, তিন একরে সয়াবিন, দুই একরে মরিচ, দুই একরে মিষ্টি কুমড়াসহ আরও বেশ কিছু সবজি চাষ করেছেন। প্রতিটি সবজির ফলন হয়েছে বেশ ভালো। তিনি জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন হয়নি। সবজি চাষের পাশাপাশি মৎস্য খামারও রয়েছে তার। হাফিজ জানান, সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয় করছেন, যা বিদেশে গিয়েও আয় করতে পারেননি তিনি।

হাফিজের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা জংশন এলাকায় মো. হাফিজ উদ্দিনের বাড়ি। কর্মসংস্থানের আশায় ২০০৮ সালে দুবাই গিয়েছিলেন। বিদেশের মাটিতে কঠোর পরিশ্রম করে অনেক টাকা রোজগার করেছেন ঠিকই কিন্তু মন টেকেনি সেখানে। নিজের দেশে কিছু করবেন-এই ভাবনা থেকে ২০১৮ সালে বাড়ি চলে আসেন। নামেন কৃষিকাজে। মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় হাফিজ উদ্দিন একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। হাফিজের কৃষি খামারে মাসিক বেতনে ১০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এছাড়া দৈনিক মজুরিতে আরও ৮-১০ জন শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকরা জানান, ৬ মাস আগে ক্যাপসিকামের চারা লাগিয়েছিলেন। গত দুই মাস ধরে বিক্রি করা হচ্ছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আরও দুই মাস ক্যাপসিকাম বিক্রি করা যাবে। হাফিজ উদ্দিন জানান, ৮ একর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করতে তার ২১ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। গত দুই মাসে যে পরিমাণ ক্যাপসিকাম বিক্রি হয়েছে, তাতে তিনি চলতি মৌসুমে দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন। সবজির পাশাপাশি তিনি তিনটি পুকুরে মাছ চাষ করছেন। এছাড়া একটি হাঁসের খামার করার কাজ শুরু করেছেন। তার স্বপ্ন আগামীতে কমলা, মাল্টা, পেয়ারা এবং নারিকেল বাগান করবেন। তিনি বলেন, ভোলার বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে এখন কেবল শীত মৌসুমে চাষাবাদ হয়। এসব চরের চার দিকে যদি উঁচু বাঁধ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে আরও হাজার হাজার একর জমি চাষের আওতায় আসবে এবং সারা বছর চাষাবাদ হবে। তবে কৃষিতে নতুন বিপ্লব ঘটবে।

ভোলা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএফএম শাহাবুদ্দিন জানান, হাফিজ উদ্দিন একজন শিক্ষিত সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি ইলিশা রাজাপুর এলাকার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে দেশি-বিদেশি সবজি চাষ করে সফল হয়েছেন। তার দেখা-দেখি অন্যান্য শিক্ষিতি যুবকরা কৃষিতে আগ্রহী হয়ে উঠলে দেশ আরও সমৃদ্ধ হবে। বেকারত্ব দূর হবে।