আনোয়ার হোসাইন জুয়েল: তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: , আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৩ , আজকের সময় : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

তাড়াইলে তালজাঙ্গা ইউনিয়নে ভিজিএফ চাউলে পুকুর চুরি

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তায় অসহায়, দুঃস্থ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি/পরিবারের মাঝে শুরু হয়েছে চাল বিতরণ। এরই ধারা বাহিকতায় কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলায় ১নং তালাজাঙ্গা ইউনিয়নে ৩ হাজার ২’শ ৭৪টি পরিবারে ৩২৭৪০ কেজি ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছে।

তবে মাথা পিছু ১০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা থাকলেও তালজাঙ্গা ইউনিয়নের আকুবপুর, শাহবাগ, লাখপুর, চিকনী, কার্তিকখিলা, বান্দুলদিয়া ও আউজিয়া গ্রামের অতিদরিদ্র, অসহায়, দুঃস্থ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি/পরিবারের মাঝে ৭ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

চাল পাওয়া কার্তিকখিলা গ্রামের হোসনে আরা ও শাহবাগ গ্রামের জুলেখা বলেন, কোন মেশিন বা পাল্লা-পাথর দিয়ে ওজন না দিয়ে মনগড়া বালতিতে করে চাল দেওয়া হয়েছে। এতে কেউ সাত কেজি, সাড়ে সাত কেজির বেশি চাল পাননি।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট্ট একটি বালতির বেশি অর্ধেক করে চাল দেওয়া হচ্ছে। চাল নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তির চাল মেশিনে মেপে দেখা যায়, কোন ব্যাগে সাত কেজি, কোন, ব্যাগে সাড়ে সাত কেজি চাল রয়েছে। ট্যাগ অফিসারের সামনেই এসব চুরি হতে দেখা যায়। তাছাড়াও ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বারের ভাইয়ের হাতে ৫০টি চাউলের স্লীপ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপের তালজাঙ্গা ইউনিয়নে নিয়জিত ট্যাগ অফিসার রাব্বিকুল আলম বলেন, ৩০ কেজি বস্তাতেই ২৯ কেজি চাল আছে। তাই হয়তো কিছু কম হচ্ছে। আপনার সামনেই এতবড় চুরি হচ্ছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এখানে ওজন দেওয়ার যন্ত্র নেই। বালতিতে করে অনুমানে চাল দেওয়া হচ্ছে। তবে বেশি কম হওয়ার কথা না।

১নং তালাজাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু জাহেদ ভূঞাকে জিজ্ঞাসা করিলে, তিনি সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার লোকদের বলেন, এই সংবাদ কর্মীদের বেধে রাখ। চাল কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাল এভাবেই দিব কি করিস কর। আমার পিছনে কে আছে জানিস? ইউনু বা উপজেলা চেয়ারম্যানও আমার কিছু করতে পারবে না। তুরা আমার নামে যা পারিছ লিখ। তিনি আরও বলেন, টাকা দিলে সব মেনেজ করা যায়। এক পর্যায়ে তিনি সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও হামলা করার চেষ্টা করে।

১নং তালজাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আতহার উদ্দিন খান বলেন, আপনারা আসাতে চেয়ারম্যানের মাথা গরম হয়ে গেছে। তাই তিনি আপনাদের উপর চড়াও হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলছি।

উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব জহিরুল ইসলাম শাহিন ভূঞাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সরকারি জিনিস সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বিতরণ করতে হবে। এ ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। কোনক্রমেই যেন ১০ কেজির কম না হয়। এটা গরিবের হক। তারা যেন ন্যায্য চাল বুঝিয়া পায়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা শারমীন বলেন, চাল কম দেওয়ার কোন সুযোগ নাই। এ ব্যাপারে প্রত্যেক চেয়ারম্যানদের কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া আছে। কোনো ধরনের অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।