রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প-কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন,‘সরকার পোশাক শ্রমিকদের জন্য যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেছে তা আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে স্ট্যান্ডার্ড এবং কোনভাবেই লজ্জাজনক নয়।’
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয় এবং ২৩ হাজার টাকার মজুরির দাবি মেনে না নেওয়া দুঃখজনক ও লজ্জাজনক এমন মন্তব্য করে আট মার্কিন কংগ্রেস সদস্য আমেরিকান অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনকে (এএএফএ) যে চিঠি দিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন পরিশোধের ব্যাপারে আমরা খুবই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সেটি অব্যশই তাদের জীবন ধারনের জন্য সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। আমরা এমন বেতন কাঠামো নির্ধারনের পক্ষে যেটি নিয়মিত পরিশোধ করতে পারবো। এমন মজুরি করা হলো যে, ১/২ মাস বেতন দেওয়ার পর কারখানা চালানো গেলো না, সেটি নিশ্চয়ই কারো কাম্য নয়।’
২৩ হাজার টাকা বা ২০৮ ডলারের ন্যূনতম মজুরির দাবি মেনে নিতে সরকার ও তৈরি পোশাক খাতের উৎপাদকদের চাপ দিতে আমেরিকান অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনকে (এএএফএ) চিঠি দিয়েছে ৮ মার্কিন কংগ্রেস সদস্য। ১৫ ডিসেম্বর তাঁরা এএএফএর সভাপতি ও প্রধান নির্বাহী স্টিভেন ল্যামারের কাছে এই চিঠি দেন। সেখানে সম্প্রতি ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি যথেষ্ট নয় এবং ২৩ হাজার টাকার মজুরির দাবি মেনে না নেওয়া দুঃখজনক ও লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেন কংগ্রেস সদস্যরা।
গত ৭ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার ৮ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১২ হাজার ৫০০ টাকার ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে। মজুরি বৃদ্ধির হার ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। এর সঙ্গে বছরে পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট রয়েছে।
ইতোমধ্যে নতুন এই মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে বলে জানান বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি বলেন, ৫৬ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করে যে নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি আমরা বাস্তবায়ন করছি। তবে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদেরও দায়িত্ব রয়েছে পোশাকের মূল্য বাড়ানোর।’
যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর নিকট পাঠানো চিঠিতে কংগ্রেস সদস্যরা বলেছেন, ব্র্যান্ডগুলো যেন বাংলাদেশের পোশাক সরবরাহকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে সম্পর্ক রাখার অঙ্গীকার করে। ২৩ হাজার টাকা মজুরি দিতে যে ব্যয় বৃদ্ধি হবে,তার পুরোটা যেন পোশাকের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়।
এই প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, মজুরি বৃদ্ধির সাথে সাথে কংগ্রেস সদস্যরা পোশাকের মূল্য বাড়ানোর কথা বলেছেন। আমরা ইতোমধ্যে ৫৬ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধি করেছি। এর সঙ্গে সমন্বয় করে ক্রেতাদের উচিত মূল্য বাড়ানো।