অমর একুশে বইমেলার ২৬তম দিনে কবিতা ৯৮,উপন্যাস ৩৪ ,গল্প ২৯ ,প্রবন্ধ ১৩ ও অন্যান্য ১৪ টিসহ নতুন বই এসেছে মোট ২৪৬টি।
আজ বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : আবুবকর সিদ্দিক এবং স্মরণ : আজিজুর রহমান আজিজ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে ফরিদ আহমদ দুলাল এবং কামরুল ইসলাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মামুন মুস্তাফা, তৌহিদুল ইসলাম, মো. মনজুরুর রহমান এবং আনিস মুহম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি আসাদ মান্নান।
প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের স্বনামধন্য বহুমাত্রিক বহুদর্শী কবি-গীতিকার-ছড়াকার-গল্পকার-নাট্যকার-ঔপন্যাসিক আজিজুর রহমান আজিজ শিল্প-সাহিত্য- সংস্কৃতির সকল শাখায় সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিয়েছেন।
অন্যদিকে, বাংলা সাহিত্য জগতে কবি আবুবকর সিদ্দিক নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাতন্ত্র্যম-িত একটি নাম। তিনি নিজেকে সাম্যবাদী চেতনার একজন লেখক হিসেবে শুধু প্রতিষ্ঠিতই করেননি, বরং জীবনাচারেও একজন সত্যাশ্রয়ী নির্লোভ মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে গুরুত্বপূর্ণ কবি এবং প্রভাববিস্তারী কথাসাহিত্যিক।
সভাপতির বক্তব্যে কবি আসাদ মান্নান বলেন, কবি ও সাহিত্যিক আজিজুর রহমান আজিজ এবং আবুবকর সিদ্দিক তাদের সৃজন প্রতিভা দিয়ে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। এ দুজন সাহিত্যিকের জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে হলে তাদের সাহিত্যকর্ম অবশ্যই পাঠ করতে হবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন প্রাবন্ধিক সরকার আবদুল মান্নান, কবি ইউসুফ রেজা, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক দিলওয়ার হাসান এবং কথাসাহিত্যিক মোস্তফা তারিকুল আহসান।
বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন মঞ্চের আয়োজন মঞ্চে বিকেল ৫ টায় সাম্প্রতিক বাংলা কবিতা বিষয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেনÑ সঞ্জীব পুরোহিত, তারেক রেজা, জাহিদ সোহাগ, আফরোজা সোমা, আহমেদ শিপলু, রাদ আহমদ এবং সৈয়দ জাহিদ হাসান। সঞ্চালনা করেন ফারহান ইশরাক ও খালিদ মারুফ।
বইমেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মুহাম্মদ সামাদ, শামীম রেজা, রহীম শাহ, নভেরা হোসেন এবং ইমরান পরশ।
আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ম ম জুয়েল, আরিফ হাসান, আলম আরা জুঁই, খোদেজা বেগম। এছাড়া ছিল জয়দুল হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সাহিত্য একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, মুশতাক আহমেদ লিটনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আমরা কুঁড়ি’ এবং শাহিনুর আল-আমীনের পরিচালনায় সংগঠন ‘সম্প্রীতি সংস্কৃতি বন্ধন’-এর পরিবেশনা।
এতে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মোস্তাক আহমেদ, বাউল আব্দুর রহমান, মো. আরিফুর রহমান, আইয়ুব মোহাম্মদ খান, ফারহানা শিরিন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. আলী হোসাইন, মীর তারিকুল ইসলাম, সঞ্জয় কুমার দাস, ঈষিতা বড়–য়া, মো. শাহীনুর ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন।
অমর একুশে বইমেলার আয়োজনের অংশ হিসেবে গুণীজন স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪ এ কথাপ্রকাশ-কে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হয়।
২০২৩ সালে প্রকাশিত বিষয় ও গুণমানসম্মত সর্বাধিক সংখ্যক বই প্রকাশের জন্য এ পুরষ্কার প্রদান করা হয়। ২০২৩ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে শৈল্পিক ও গুণমান বিচারে সেরা বই বিভাগে মনজুর আহমদ রচিত একুশ শতকে বাংলাদেশ : শিক্ষার রূপান্তর গ্রন্থের জন্য প্রথমা প্রকাশন, মঈন আহমেদ রচিত যাত্রাতিহাস : বাংলার যাত্রাশিল্পের আদিঅন্ত গ্রন্থের জন্য ঐতিহ্য এবং আলমগীর সাত্তার রচিত কিলো ফ্লাইট প্রকাশের জন্য জার্নিম্যান বুকস-কে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০২৩ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ বইয়ের মধ্য থেকে গুণমান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য ময়ূরপঙ্খি-কে রোকনুুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হলো।
এবছর অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্য থেকে নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্যপ্রকাশ (প্যাভিলিয়ন), নিমফিয়া পাবলিকেশন (২-৪ ইউনিট), বেঙ্গল বুকস (১ ইউনিট)-কে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেয়া হয়।
আগামী ২৯শে ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলার শেষ দিনে সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রাপ্তদের পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।