রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১১:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
জাল ভোট পড়লেই কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে : ইসি আহসান হাবিব জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে মুখস্ত শিক্ষার ওপর নির্ভরতা কমাতে পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী কিশোরগঞ্জে তীব্র দাবদাহে ইসলামী যুব আন্দোলনের হাতপাখা বিতরণ দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে টেকসই কৌশল উদ্ভাবনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে : বিচারপতি নিজামুল হক গলাচিপা ও দশমিনায় প্রকাশ্যে নিধন হচ্ছে রেনু পোনা,কথা বলতে নারাজ কর্তৃপক্ষ ডিএসইসির নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ বেলা অবেলা : স্বপ্না রহমান ডিএসইসি’র নতুন সভাপতি ডিবিসি’র মুক্তাদির অনিক

হরিরামপুরে নেই সরকার নির্ধারিত দামের প্রভাব

দিপংকর মন্ডল, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি:
  • আপলোডের সময় : বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৫৮০৪ বার পঠিত

সিন্ডিকেটের হাত থেকে ভোক্তাদের পকেট কাটা রোধ করতে, সরকার বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে বাজার মনিটরিং এর অভাবে সেই সুফল পাচ্ছে না মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সাধারণ ভোক্তারা।

এ মাসের ১৪ তারিখে বানিজ্য মন্ত্রণালয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে সর্বোচ্চ খুচরা পর্যায়ে আলু প্রতি কেজি ৩৫-৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬৪-৬৫ টাকা ও ডিম প্রতি পিচ সর্বোচ্চ খুচরা পর্যায়ে ১২টাকা নির্ধারণ করে দেন।

নির্ধারণ করে দেবার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও জেলার হরিরামপুর উপজেলার কোন বাজারেই এই দাম মানা হচ্ছে না। বরং আলু প্রতি কেজি ৫০ টাকা, দেশি পেয়াজ ৭৫ টাকা ও প্রতি পিচ ফার্মের ডিম সাদা ১২ টাকা ও লাল ডিম ১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত ভোক্তারা। তাদের দাবী সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্যগুলো বিক্রি করতে প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে।

সরেজমিনে লেছড়াগঞ্জ বাজারের কাচামালের দোকান থেকে কথা হয় আরিফ নামের এক ক্রেতার সাথে। তিনি জানান, “সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে আমাদের আলু পেয়াজ সহ কাচামাল গুলো কিনতে হচ্ছে। আমরা কি করবো বলেন, আমরা তো নিরুপায়। আমাদের তো খেতে হবে। তাই বেশি দাম হলেও আমরা কিনতে বাধ্য হচ্ছি। এগুলো কে দেখবে, প্রশাসন? কই তাদের তো কোন ভূমিকা দেখছিনা। যদি তারা বাজার মনিটরিং করতো তাহলে তো দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ হতো না।”

ঝিটকা বাজারের আরেক ক্রেতা মো. মোস্তাফিজ জানান, প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই সরকারি মূল্যে কাচামাল বিক্রি হচ্ছে না। তারা নজরদারি বাড়ালেই হরিরামপুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝিটকা বাজারের কয়েকজন খুচরা কাচামাল বিক্রেতা জানান, মানিকগঞ্জ থেকে খরচ সহ ঝিটকা বাজারে আনতে আমাদের আলু প্রতি খরচ হচ্ছে ৪২/৪৩ টাকা তাই আমরা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। আর ঝিটকার আড়ৎদাররা আলু বিক্রি করছে ৪৩ টাকায়। এছাড়া একসাথে পাল্লা (৫কেজি) নিলে আমরা খুচরা ২৪০ টাকা দামে বিক্রি করছি।

তিনি আরও বলেন, সরকারি দামে আমরা কিনতে পারলে আমরাও দাম কমিয়ে বিক্রি করবো।

এছাড়া দেশি পেয়াজ ঝিটকা থেকেই কিনতে হচ্ছে মণ প্রতি ২৭০০ থেকে ২৮০০ টাকায়। এতে প্রতি কেজি আমাদের ৬৮/৭০ টাকার উপরে ক্রয় করতে হচ্ছে, তাই আমরা ৫ টাকা লাভে সেটি বিক্রি করছি ৭৫ টাকায়। এছাড়া ভারতীয় পেয়াজ বিক্রি করছি ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।

লেছড়াগঞ্জ বাজারের কাচামাল বিক্রেতা মুকুল জানান, আমরা সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কাচামাল কিনছি বলেই বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। আজকে (বৃহস্পতিবার) জায়গীর আড়ৎ থেকে নুর ইসলামের কাছ থেকে ৪১ টাকা ৫০ পয়সা কেজি দরে পাইকারি আলু কিনে এনেছি। সেখানেই প্রশাসনের নজরদারি নেই। তাহলে আমরা কিভাবে কমে বিক্রি করবো বলেন। খুচরা পর্যায়ে কাচামালের দাম কমাতে হলে কোল্ডস্টোরেজের পাশাপাশি আড়ৎ এ নজরদারি বাড়াতে হবে মনে করেন তিনি। এছাড়া বেশি দামে কাচামাল কিনলেও তাদের আড়ৎদাররা রশিদ ও দিচ্ছেন না বলেও দাবি তার।

ঝিটকার দুই আলুর আড়ৎদার মধ্যে একজন মো. শাজাহান জানান, আমার দোকানে ঠাকুরগাঁও এর মোকাম থেকে গত সপ্তাহে আগের দামে আলু কেনা তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। আলুর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা কম তাই আগের মোকামের আলু গুলো বিক্রি শেষ হয়নি। তাই বর্তমান মূল্যের আলু কিনতে পারছিনা। আগের আলু গুলো বিক্রি করে নতুন দামের আলু আনলে কম দামে বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

সোনামুদ্দিন বেপারী ট্রেডার্সের দোকানে গিয়ে দেখা যায় তার দোকানে কোন আলু নেই। এব্যাপারে তার দোকান থেকে মো. মিলন জানান, মোকামে আলুর দাম ৪১ টাকা কেজি। তারপরও তারা আলু কিনলে কোন রিসিভ দিচ্ছেন না। এজন্য আমরা আলু বিক্রি আপাতত বন্ধ রেখেছি। বাজারে আলুর দাম মোটামুটি স্বাভাবিক হলে তারপর আলু বিক্রি শুরু করবো।

এবিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, “সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে আমরা ভোক্তা অধিকারের সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের মনিটরিং অব্যাহত আছে।”

জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, আমাদের রেগুলার মনিটরিং চলছে। আমাদের এলাকায় আলু গুলো আসে উত্তরবঙ্গ থেকে। কোল্ডস্টোরেজ থেকে সরকারের যে নির্ধারিত দাম সেটা মানছেনা তারা। এজন্য খুচরা বাজারে এখনো দামটা কমে নাই। তবে আমরা আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে দামটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, এখন কোল্ডস্টোরেজ থেকে ৩৪ টাকা দরে আলু পাওয়া যাচ্ছে। আবার পেয়াজ টাও যেখান থেকে আসছে। সেটাও মোটামুটি কমে যাচ্ছে। আমাদের মনিটরিং অব্যাহত আছে সে বিষয়ে কোন ডাউট নাই। তবে দামটা স্বাভাবিক হতে হয়তো আর দু-একদিন সময় লাগবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..