রায়হান চৌধুরী, কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের তেলুয়া মাইনকার বিলের কৃষি জমি রক্ষার্থে অবৈধ ভাবে স্থাপিত ড্রেজার বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। সোমবার সকালে দৈয়ারা বাজারে শত শত কৃষকের উপস্থিতিতে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন ভুইয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কৃষক আবুল বাশার ভুইয়া, সেলিম সরকার, মমতাজ ভুইয়া, বিল্লাল সরকার, রাসেল ভুইয়া। অন্যান্যের মধ্যে আরোও উপস্থিত ছিলেন, সাবেক ইউপি সদস্য মজিবুর রহমান, কৃষক মফিজ উদ্দিন, গোলাম মোস্তফা, তমিজ উদ্দিন, মফিজ সরকার, তাজুল ইসলাম, রমিজ ভুঁইয়া, তফাজ্জল হোসেন, কামরুল ইসলাম, খোকন মিয়া, জসিম উদ্দিন ও বাবুল মিয়া প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তেলুয়া গ্রামের মৃত আবুল বাশারের ছেলে কাজী রকিব মিয়া ও কালাডুমুর গ্রামের আলী মিয়ার ছেলে মোশারফ হোসেন তেলুয়া মাইনকার বিলে ড্রেজার বসিয়ে ২/৩ বছর যাবত অবৈধ ভাবে মাটি বিক্রি করছে একটি চক্র। এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন ফল হচ্ছে না। মাত্র ৩৫ শতক জমিতে ড্রেজার বসিয়ে মাটি উত্তোলন শুরু করে এখন সেটি গভীর নদীতে পরিনত হয়েছে।
কৃষক আবুল বাশার ভুইয়া বলেন, ছোট্ট একটি জমিতে ড্রেজার বসানো হলেও অন্যের জমি যখন ভেঙ্গে পড়ে, তখন তাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নামমাত্র মূল্য দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কৃষকের জমি। এ অবস্থা চলতে থাকলে প্রকৃত কৃষকরা ফসলি জমি হারিয়ে ঘরে বসে যাবে। এ ব্যাপারে কোন প্রকার শব্দ করলেই ড্রেজার মালিক কাজী রকিব মিয়া ও মোশারফ হোসেন আমাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
কৃষক মমতাজ ভুইয়া বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৬/১৭ দিন পূর্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেজার মেশিন ও পাইপ বিনষ্ট করলেও অদৃশ্য ক্ষমতা বলে পরের দিনই আবার মাটি উত্তোলন শুরু করছে। স্থায়ী কোন ব্যবস্থা না নিলে ভূমিখেকোদের নির্মূল করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলেই আমাদেরকে প্রকাশ্যে ভয়ভীতি দেখানো হয়। ফলে সাধারণ কৃষকগণ ড্রেজারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতো দূরের কথা ভয়েও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ড্রেজার ব্যবসায়ী কাজী রকিব মিয়া ও মোশারফ হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাবুটিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আরমান মিয়া বলেন, ড্রেজারের ব্যাপারে কোন আপোষ নেই। মাটি খেকু যারাই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী ভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দীন ভূঞা জনী বলেন, উক্ত ড্রেজারের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে অভিযান চালিয়ে পাইপ ও মেশিন বিনষ্ট করেছি। ভবিষ্যতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।