বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরে উঠেছে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার প্রতিটি বাজার । কিন্তু সব প্রকার সবজির দাম উর্ধ্বমুখি। খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ে সবজির দাম এখন ভোক্তার নাগালের বাইরে চলে গেছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে গেছে অনেক।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সরজমিনে উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে ভোক্তাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, শীত মৌসুমে সবজির দাম থাকলেও রমজান মাস উপলক্ষে সবকিছুর দামেই ঊর্ধ্বমুখি। বিশেষকরে দুধ, চিনি, ছোলা বুট ও ডাল, বেগুন, আলু, পেঁয়াজ ও মসলার মতো অনেক নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামে সীমাহীন কষ্টে স্বল্প আয়ের মানুষ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্যের দর ওঠানামার বিষয়টি নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছিল, সে জন্য দাম একটু কম ছিল কিন্তু রোযা উপলক্ষ্যে সবকিছুর দাম ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
তাড়াইল সদর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শিম ৪০-৬০, বেগুন ৬০, করলা ৮০, মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, ফুলকপি পিস কেনা যাচ্ছে ৪০, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, কাঁচামরিচের কেজি (বিন্দু) ১২০ টাকা। টমেটো ৪০ টাকা, আলু ৪০ টাকা, ডায়মন্ড আলু ৩৫ টাকা, পেঁয়াজ ৯০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, আদা ২০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, হলুদ ২৬০ টাকা, , লাউ প্রতি পিচ ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, পুরল ৪০টাকা, শসা ৮০ টাকা, লতা ৬০টাকা, পেঁপে ৪০টাকা, গাজর ৪০টাকা, লেবু কেজি ১২০ টাকা, আধা ২০০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১২০-২০০টাকা।
খেজুর কেজি ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকা, প্যাকেটজাত আটা ৬৫ টাকা, মুশুরির ডাল ১১০ টাকা, ছোলার বুট ১০০ টাকা, মুগের ডাল ১৮০ টাকা, ডিম ৪০ টাকা হালি, সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা লিটার এবং খোলা তেল ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে চাল কেজি প্রতি কাটারি ৬৬ টাকা, ইন্ডিয়ান ৭৫ টাকা, ৪৯ চাউল ৫৫ টাকা, ২৯ চাউল ৫৫-৬০ টাকা, বিআর(২৮) ৬৪ টাকা, বিআর (২৯) ৫৮ টাকা, কাটা চাল ৪২ টাকা, আতব ৪৮ টাকা, পোলাও ৯০-১০০ টাকা।
এদিকে মাংসের বাজারে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগী প্রতি কেজি ২০০ টাকা, কক ৩২০ টাকা, লেয়ার কক ৩৫০ টাকা, ক্লাসিক (সোনালী) ৩২০ টাকা, কালার বাট ২৯০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০ টাকা, খাসি ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের বাজারে আগের তুলনায় তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।
বাজার করতে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম উর্ধ্বমুখি। বাজার করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে সকল পণ্যের দাম বাড়তে থাকলে আমরা যারা নিম্ন আয় ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক তাদের বাজার কিনে খেয়ে বেঁচে থাকার মতো অবস্থা নেই।
তারা আরো বলেন, গরু ও খাশির মাংসের কাছে তো অনেক আগে থেকেই ঘেষা যাচ্ছে না। মধ্যবিত্তের মাংসের খাবার বলতে ব্রয়লার মুরগী তারও দাম বেড়ে গেছে। ফলে রোজার মধ্যে মুরগীর মাংসও কিনতে পারছি না। সবকিছু আমাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বাজার করতে আসা আলী হায়দার সহ আরো অনেকেই বলেন, আমাদের দুর্দশার শেষ নেই। আয় বাড়েনি অথচ সবকিছুর দাম উর্ধ্বমূখী। মাছ, মাংসের বাজারেও আগুন। দ্রব্যমূল্যের এতো দাম যে, যা কিনতে বাজারে আসছি তার কিছু কিনেছি আর বাকিগুলো না কিনেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
উপজেলা সদরের কাচা বাজার ব্যবসায়ী হুমায়ুন আহমাদ সহ আরো অনেকেই বলেন, বর্তমানে কাঁচা বাজারের সবজি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম একটু বেশি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মৌখিক নির্দেশ দিয়েছি যে, সরকার নির্ধারিত দামে সকল পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য। তাছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।