মো: রায়হান চৌধুরী, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
উজানে ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা ঢল এবং টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালীসহ দেশের ১২টি জেলা। গত ২৭ বছরের রেকর্ড ভেঙে বিপৎসীমার ১৩৬ সেন্টিমিটার এর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল গোমতি নদীর পানি। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে নদীটির পানির উচ্চতা। তবে এখন পর্যন্ত পানি পুরোনো রেকর্ডের ওপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এখনো ঝুঁকি রয়ে গেছে অনেক। গত বুধবার (২১ আগস্ট) থেকে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় একে একে তলিয়ে যেতে থাকে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রাম। প্রথম দিকে বানের তীব্রতা বেশি না থাকায় ঘরবাড়িতে অবস্থান নেওয়া মানুষ হয়ে পড়ে পানিবন্দি। বেরিবাধ এলাকায় প্রায় সকল বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়ায় ১৫ টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় বানবাসি মানুষ।
এখন পানি কমতে শুরু করায় লোকজন আবার বাড়ি-ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে ভয়াবহ এক সপ্তাহ জুড়ে বানভাসি মানুষদের বন্ধু হয়ে কাজ করেছেন সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর আসনের পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রিয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ও তার পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কায়কোবাদ ও তাঁর পরিবার প্রায় ৫ হাজার বন্যার্ত পরিবারের মাঝে তিনবেলা রান্না করা খাবার বিতরনসহ বাঁধ নির্মাণ, চিকিৎসাসেবা, উদ্ধার তৎপরতা, হেল্প ডেস্ক চালুকরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে। তাঁরা তীব্র পানির স্রোত উপেক্ষা করে বানবাসি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। প্রথমদিকে কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ও তার পরিবারের নির্দেশে বেরীবাধ এলাকার প্রতিটি স্থানের পানিবন্দি মানুষদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তারাঁ মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে নেমে পড়েন উদ্ধার কাজে। ট্রাকে বয়ে নৌকা নিয়ে নেমে পড়েন বন্যাদুর্গতদের মানবিক সাহায্যে।
বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া একাদিক লোকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, কায়কোবাদ ও তাঁর পরিবার মুরাদনগর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার সব রকম প্রেক্ষাপটে মানুষের পরম বন্ধু হয়ে কাজ করেন। এবারের বন্যায় তাদের উদ্যোগ আমাদের রিতিমতো হতবাক করেছে। তাদের নির্দেশে বিএনপির লোকজন অক্লান্ত শ্রম ও সাহসিকতা দিয়ে তারা অসংখ্য বানভাসি মানুষকে চরম বিপদ থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা তিন বেলা খাবার দেওয়াসহ নানা সহায়তা নিয়ে বন্যার্তদের পাশে আছেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হক বলেন, ‘কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ও তার পরিবারে ব্যাক্তিগত আর্থিক সহযোগিতায় মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সদস্যরা তিনবেলা রান্না করা খাবারসহ বিভিন্ন প্রকার ত্রাণ ও চিকিৎসাসেবা দুর্গত এলাকাসহ আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে। আমাদের নেতার নির্দেশে করা হয়েছে জরুরি খাদ্য ও সহায়তার বন্দোবস্ত। এছাড়া বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর স্থানীয়দের পূর্ণবাসন নিয়ে কাজ করেছেন শাহ পরিবার। যতদিন পর্যন্ত বন্যার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে ততদিন পর্যন্ত এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, উপজেলা বিএনপির সদস্যরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে কমপক্ষে দশ হাজার মানুষকে সেবা দিয়েছে। মাইকিং ও পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধারের পাশাপাশি প্রতিটি পরিবারদের মাঝে বিভিন্ন প্রকার রান্না করা খাবার, খাবার পানি, শুকনো খাবার ও শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে এবং বিএনপির সকল সদস্যরা দিন-রাত বন্যার্তদের জন্য অক্লান্ত কাজ করছেন।