ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোট হবে ২৬ ডিসেম্বর। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় মূলত দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে লড়তে হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের। ভোটের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে প্রচারের মাঠ। গত রবিবার সকালে পক্ষিয়া ইউপির চশমা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) ও উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলাউদ্দিন সরদার হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এর আগে ৭ ডিসেম্বর প্রার্থী আলাউদ্দিন সরদার কাফনের কাপড় পরে প্রতীক আনতে যাওয়ার পথে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলার শিকার হন। এতে তাঁর প্রায় ১০ জন কর্মী ও সমর্থক আহত হয়েছেন। ওই সময় তাঁদের ৮টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলাউদ্দিন সরদার। এ ছাড়া গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কাঞ্চন মাঝি ও তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কাঞ্চন মাঝি অভিযোগ করেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় পক্ষিয়া ইউনিয়নের বোরহানগঞ্জ বাজারে জনসংযোগ করতে যান তিনি। এ সময় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা কাঞ্চন মাঝির ওপর হামলা চালান। এতে শতাধিক কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী নাগর হাওলাদার। এদিকে, পক্ষিয়া ইউনিয়নে সহিংসতা বাড়ায় প্রার্থী ও সাধারণ ভোটারের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ফুটবল প্রতীকের সদস্য প্রার্থী হুমায়ুন কবির, ওই এলাকার ভোটার রত্তন মাঝি, শাহে আলম, আকতার হোসেন, আলাউদ্দিন জানান, পক্ষিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রার্থী ও সাধারণ ভোটারেরা। এ ছাড়া ৮ ডিসেম্বর দেউলা ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) অ্যাডভোকেট এ কে এম আসাদুজ্জামান বাবুলের কর্মী ও সমর্থকদের ওপর আওয়ামী লীগ মনোনীত শাহজাদা তালুকদারের কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ তাঁর ২৫ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাজাদা তালুকদার জানান, আসাদুজ্জামান বাবুলের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার সঙ্গে তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা জড়িত না। তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেন, ‘আসাদুজ্জামান বাবুল আমাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন।’ এদিকে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টগবী ইউনিয়নের হাকিম উদ্দিন বাজারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) জসিম উদ্দিন হাওলাদারের নির্বাচনী অফিসে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। জসিমউদদীন হাওলাদার বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা থেকে ছাত্রলীগের লোকজন এসে হাকিম উদ্দিন নতুন বাজার এলাকায় আমার নির্বাচনী অফিসে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। নির্বাচন অফিসে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।’ বোরহানউদ্দিন নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘প্রার্থীদের অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যেই পক্ষিয়া ইউনিয়ন ও টগবী ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’