বিএনপি নেতারা মুখে যাই বলুক, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে চলমান রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
দলটির উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে সংহত করার জন্যই রাষ্ট্রপতির এ সংলাপ। শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যেই এ সংলাপ। আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানবো এবং আশা করবো, তারা নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করবে। সবকিছুতে ‘না’ বলার রাজনীতি থেকে সরে আসবে এবং চলমান সংলাপে অংশ নেবে।
নতুন ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিএনপিসহ সবাইকে স্বাগত জানানো উচিত বলেও জানান হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতির পিতা শেখ মুজিব প্রামাণ্য গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, গতবারও (একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে) রাষ্ট্রপতির সংলাপের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। সেটি যে সঠিকভাবে গঠিত হয়েছিল তার প্রমাণ হচ্ছে মাহবুব তালুকদার। যিনি নির্বাচন কমিশনের অনেক বিষয়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। অনেকে বলেন, তিনি বিএনপি বা বিরোধীদের পক্ষে কথা বলেন। উনিও সংলাপের মাধ্যমেই কমিশনার হিসেবে স্থান পেয়েছেন। এটিতেই প্রমাণিত হয় সংলাপ কার্যকর। এবারও রাষ্ট্রপতি সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে যাচ্ছেন, সংলাপ শুরুও করেছেন। গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে সংহত করতেই এটি করা হচ্ছে।
বিএনপির সংলাপে অংশগ্রহণ বিষয়ে অপর এক প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিএনপিসহ সবাইকে স্বাগত জানানো উচিত। ভারতে নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে কোনো সংলাপ হয় না। অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র যেখানে বহুবছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে চর্চা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে কোনো সংলাপ নেই। কিন্তু বাংলাদেশে যে সংলাপ হচ্ছে একে ইতিবাচক হিসেবে স্বাগত জানানো প্রয়োজন ছিল।
সার্চ কমিটি নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যখন নিজেরা বিশেষ কোনো প্রাণীর মতো আরচণ করে তখন অন্যকেও সেই একই প্রাণীর মতো মনে করে, বিষয়টি ঠিক সেরকম। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিজের স্ত্রী নাসরিন কাদেরের নাম প্রস্তাব করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, উনি কেন ওনার স্ত্রীর নাম প্রস্তাব করেছেন সেই ব্যাখ্যা তো আমি দিতে পারবো না, সেটি মুজিবুল হক চুন্নুকে জিজ্ঞেস করলে ভালো হয়।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপির কোনো কথা বা আপত্তি থাকলে সেটি সংলাপে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে বলে আসতে পারেন, সেটিই হচ্ছে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি। তারা যে কথাগুলো রাজপথে বলছেন সে কথাগুলো তো রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে বলে আসতে পারেন। সেটিই একটি রাজনৈতিক দলের কাজ হওয়ার উচিত বলে মনে করি।
এসময় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।