সাব্বির আলম বাবু (ভোলা ব্যুরো চিফ):
ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে দুইদিনের টানা বর্ষণে ভোলায় কৃষকদের ৭০ কোটি ৩৬ লাখ ১১ হাজার টাকার রবিশস্য নষ্ট হয়েছে। ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৮৮ হাজার ৭৩১ হেক্টর জমির ফসল। এর মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ১০ হাজার ২৩৮ হেক্টর জমির ফসল। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্র জানায়, গত দুইদিনে ভোলায় ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর সঙ্গে ঘণ্টায় দুই-তিন কিলোমিটার বেগে ঝড়ো বাতাস বয়ে যায়। প্রকৃতিক এ দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে কৃষকদের রবিশস্য।
ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে বোরো ধান আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমির। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার ৩৩৪ হেক্টর জমির ধান। টাকার অংকে ধানের ক্ষতির পরিমাণ নয় কোটি ৪৫ হাজার টাকা। জেলায় ১৮ হাজার ২৮৭ হেক্টর জমির মুগ ডাল আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক হাজার ৭৫ হেক্টর জমির ডাল। টাকার অংকে এখানে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় আট কোটি ২৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে এক হাজার ৭২৩ হেক্টর জমির ফেলন (বিউলি) ডাল আক্রান্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৬৬ হেক্টর জমির ফসল। এখানে ক্ষতির পরিমাণ ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। জেলায় সয়াবিন আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ৯৩৯ হেক্টর জমির। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই হাজার ৯৮৪ হেক্টর জমির সয়াবিন। এখানে ক্ষতি হয়েছে তিন কোটি ৫৮ লাখ ২০ হাজার টাকার। ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে সাত হাজার ৪৬৭ হেক্টর জমির ফসল। এখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই হাজার ২৬২ হেক্টর জমির ফসল। টাকার অংকে এ ক্ষতির পরিমাণ ২৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। জেলায় চীনা বাদাম আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ৭৬ হেক্টর জমি। এর মধ্যে ক্ষতি হয়েছে তিন হাজার ৩২২ হেক্টর জমির বাদাম। টাকার অংকে এর ক্ষতির পরিমাণ ২৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অন্যদিকে জেলায় সবজি ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে চার হাজার ৮৯০ হেক্টর জমির। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এক ৪৬৭ হেক্টর জমির সবজি। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ দুই কোটি ৬৪ লাখ হাজার।
কৃষি অফিসের হিসেবে জেলার সাত উপজেলায় মোট ৪৫ হাজার ২৭৭ মেট্রিক টন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। যদি কৃষকদের জন্য কোনো প্রণোদনা বা বরাদ্দ আসে, তাহলে কৃষকদের সহযোগিতা করা হবে। তবে যেসব ফসলের ক্ষেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেসব ফসল পেকেছে, সেগুলো দ্রুত কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।