ইটভাটার ট্রাক্টর, ড্রামট্রাক থেকে মাটি পড়ে বেহাল হয়ে পড়ছে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ। পিচের ওপর মাটি পড়ায় রাতের কুয়াশায় পিচ্ছিল হচ্ছে রাস্তা। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে প্রাণহানির ঝুঁকি। বিশেষ করে উপজেলার পান্নারপুল অংশের রাস্তা পিচ্ছিল হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের। গত ৩-৪দিনে ১০/১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে সড়কের পান্নারপুলসহ বিভিন্ন স্থানে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ও দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়ক কাদা সড়কে পরিণত হয়েছে। ইটভাটার ট্রাক্টর, ড্রামট্রাক ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বহন করা মাটি সড়কে পড়ে রাতের কুয়াশায় পাকা সড়কগুলো পিচ্ছিল হয়ে পড়ছে। আবার সড়কের ওপর থাকা এসব মাটি দিনে শুকিয়ে যখন ধূলাবালি সৃষ্টি করে তখন সড়কের আশপাশের ব্যবসায়িরা পানি ছিটিয়ে কাদায় পরিণত করছে।
এদিকে বৃহষ্পতিবার রাতে মাত্র ৫ ঘন্টার ব্যবধানে ১০টির বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পান্নারপুল নামক স্থানে।এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেবিদ্বার থানায় শনিবার লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে দাবি জানিয়েছেন দুর্ঘটনার শিকার এক ভুক্তভোগী।
পান্নারপুলে দুর্ঘটনায় আহত মোটরসাইকেল চালক সাব্বির হোসেন জানান, ইটভাটার কাজে নিয়োজিত মাটিবাহী যানবাহন থেকে রাস্তায় পড়ে যাওয়া মাটি রোদের সময় রাস্তায় শুকিয়ে ধূলাবালি সৃষ্টি করলে সড়কের পাশের ব্যবসায়িরা সেখানে পানি ঢেলে ধূলামুক্ত হতে কর্দমাক্ত করছে আর রাতে শিশিরে ভিজে আরও পিচ্ছিল হচ্ছে। দেখে বোঝার উপায় থাকে না এটা কার্পেটিং রাস্তা।এভাবে সড়কে চলাচল করতে ঘটছে দুর্ঘটনা ও পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইটভাটায় মাটি আনার সময় ট্রাক্টর, ড্রামট্রাক থেকে মাটি পড়ছে রাস্তায়। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ও যানবাহন।পাকা রাস্তা এখন কাচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। ইটভাটার মাটির কারণে জনগণ কেন কষ্ট করবে ? ইটভাটার লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টর, ড্রামট্রাক রাস্তায় চললে প্রশাসন কিছুই বলে না। এ গাড়িগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
মাইক্রোবাসচালক সফিকুল ইসলাম জানান, ইটভাটার মাটি রাস্তায় পড়ে থাকে, সরানো হয় না। মাটি রাস্তার ওপর শুকিয়ে যায়। গাড়ি যখন চলে তখন ঘট ঘট শব্দ হয়। আবার রাতের কুয়াশায় ভিজে পিচ্ছিল হয়ে পড়লে সমস্যা দেখা দেয়। তখন বড় ধরনের দুর্ঘটনার ভয় থাকে। এ অবস্থায় খুবই সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়।এ বিষয়টি কারা নজরদারি করবেন জানিনা।
এ বিষয়ে মিরপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম পিপিএম বলেন, গত বৃহষ্পতিবারের ঘটনার পর আমরা দুইটি ড্রামট্রাক আটক করে মামলা দিয়েছি। এছাড়াও আমি ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতির সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানিয়েছি অপরিকল্পিতভাবে ও ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত মাটি বহন করে সড়ক নষ্ট করা যাবে না।ইটভাটার মাটি বহনকারি যানবাহনের অতিরিক্ত মাটি মহাসড়কে পড়ে সমস্যা সৃষ্টির বিষয়টি ইটভাটার মালিকরা সমধান না করলে আমরা প্রয়োজনে দেবিদ্বার, ব্রাহ্মণপাড়া ও মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করবো।
হাইওয়ে পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইটভাটার মালিকরা ব্যবসা করবেন, ঠিক আছে। কিন্তু তাদের মাটিবাহী যানবাহনের কারণে জনসাধারণের সমস্যা, দুর্ভোগ সৃষ্টি ও রাস্তাঘাটের ক্ষতি এটা মেনে নেওয়া যাবে না।