ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা, অনিয়মের দায়ে গাইবান্ধা উপ-নির্বাচন বাতিলের সিদ্ধান্ত এবং সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৫ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিরপেক্ষতা, সাহসিকতা ও সক্ষমতা প্রমানিত হয়েছে জানিয়েছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ)।
সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচন বিষয়ক অনুসন্ধানী মিশনের সঙ্গে ঢাকাস্থ ইইউ দূতাবাসে মতবিনিময়কালে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের নেতৃবৃন্দ আজ একথা বলেন।
সাক্ষাতকালে ইএমএফ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি স্থানীয় নির্বাচনসমূহে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা ব্যবস্থাসহ আইন-শৃঙ্খলা কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও গাইবান্ধা উপ নির্বাচনে অনিয়মের দায়ে নির্বাচন বাতিলের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ সাধারণ মানুষের আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি ৫ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতক দল অংশগ্রহণ না করলেও এ দলের সমর্থিত সাবেক কাউন্সিলর ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের বড় একটি অংশ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এবং অনেকেই নির্বাচিত হয়েছেন। এতে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা, সাহসিকতা ও সক্ষমতা প্রমাণ হয়।’
তারা বলেন, ‘যে সকল স্থানীয় নির্বাচন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে এতে আমাদের সরজমিনে পর্যবেক্ষণে লক্ষ্য করেছি যে, নির্বাচনে সরকার কোন প্রকার হস্তক্ষেপ বা প্রভাবিত করেনি এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকার নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন বিষয়ক অনুসন্ধানী মিশনের প্রতিনিধিবৃন্দকে অভিনন্দন জানিয়ে ইএমএফ নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ না হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের নির্বাচনে ইইউ’র আগ্রহকে আমরা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে দেখছি। তবে আমাদের নির্বাচনি পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া নিয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ এ দেশের সাধারণ মানুষ সমর্থন করেনা।’
শুধুমাত্র ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নয় ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ এর নির্বাচনের ফলাফল ও পরাজিত বিরোধী দলের বিভিন্ন অভিযোগসমূহ বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে মতামত তুলে ধরেন ইএমএফ নেতৃবৃন্দ।
ইইউ প্রতিনিধি দল ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বিষয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলসমূহের বিরোধিতা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে এবং আগামী নির্বাচনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের পর্যবেক্ষণের প্রস্তুতি বিষয়ে জানতে চেয়েছে এবং ইইউ প্রতিনিধি হিসেবে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ আছে কিনা তা জানতে চেয়েছে। প্রতিনিধি দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কোন প্রকার জানার আগ্রহ ছিল না এবং কোন প্রশ্ন করেনি।
ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলীর নেতৃত্বে সাক্ষাতকালে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের উপদেষ্টা ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ফোরামের পরিচালক ডুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান ও বুয়েটের উপ-উপাচার্য ড. আব্দুল জব্বার খান।
মতবিনিময়কালে চেলেরি রিকার্ডোর নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন দিমিত্র ইওয়ানু, আলভেস ক্রিটিনা ডস রামোস, মিলার ইয়ান জেমস, শ্যামেন ক্রিস্টোফার ও ম্যারি-হেলেন এন্ডারলিন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ, নির্বাচনী পরিবেশ, রাজনৈতিক দলের অবস্থানসহ বিভিন্ন বিষয় সরজমিনে দেখতে ঢাকায় অবস্থান করছেন ইইউ’র প্রতিনিধি দল। (বাসস)