শেরপুরে ব্যাটারি বিক্রি করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয়েছিলেন হিমেল।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রায় এক মাস আগে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেলকে অপহরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃত গাড়ি চালক ছামিদুল হিমেলকে শেরপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাটারী বিক্রির সম্ভাবনার কথা জানিয়ে শেরপুরে যেতে আগ্রহী করে তোলেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে হিমেল অপহরণের ঘটনার মূলহোতা মালেকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার রাতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে হিমলেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, হিমেলের বাবা ব্যাটারী বিক্রয়ের ব্যবসা করতেন। হাসিবুর রহমান হিমেল রাজধানীর উত্তরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। তার বাবা ৪ মাস আগে মারা যাওয়ার পর হিমেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি তার বাবার ব্যবসা পরিচালনা করতেন। সে গতবছরের ২৬ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে শেরপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার গাড়ি চালক গ্রেফতারকৃত ছামিদুলকে নিয়ে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার যোগে রওনা করেন। পরবর্তীতে হিমেল গাজীপুরে সালনা এলাকায় পৌঁছলে গ্রেফতারকৃতরা তাকে অপহরণ করে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত মালেক এবং অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছামিদুল হিমেলের বাসায় ৪ বছর যাবত গাড়ি চালক হিসেবে চাকরি করায় সুসম্পর্ক তৈরি হয় এবং তাদের পারিবারিক আর্থিক ও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সে জানতো। গতবছরের ১৬ ডিসেম্বর মালেকের নেতৃত্বে গ্রেফতারকৃতরা উত্তরার একটি জায়গায় সমবেত হয় এবং মালেক ও ছামিদুল হিমেলকে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছ থেকে বিপুল অংকের মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রেফতারকৃত ছামিদুল হিমেলকে শেরপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাটারী বিক্রয়ের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে শেরপুরে যেতে আগ্রহী করে তোলে।
আল মঈন বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় হিমেল শেরপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করলে গ্রেফতারকৃত ছামিদুল মালেককে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত মালেক ও অন্যান্য সহযোগীরা ৩/৪টি মোটরসাইকেলযোগে হিমেলের গাড়ি অনুসরন করতে থাকে এবং গাজীপুরের সালনায় এলাকায় পৌঁছলে গ্রেফতারকৃতরা মোটরসাইকেল দিয়ে হিমেলের গাড়িটি আটকিয়ে অপহরণ করে।
অপহরণকারীরা হিমেলকে নিয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করে। পরে পরিবারের কাছে ২ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং তার ছেলেকে পাশবিক কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও প্রেরণ করে। পরে র্যাব তাহিরপুরে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীদের গ্রেফতার করে।