বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর সূত্রাপুরে দুই শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলেন-কবি নজরুল সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন কাউসার ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের ওমর ফারুক।
রোববার (১৮ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে এ মামলা দায়ের করেন নাসরিন বেগম নামে এক নারী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে সূত্রাপুর থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলায় অপর আসামি করা করা হয়েছে- সাবেক সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ডাক-টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পুলিশের সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের অজ্ঞাতনামা নেতৃবৃন্দ এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যসহ আরও ২০০ থেকে ২৫০ জন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা আন্দোলনে নামে। গত ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা আন্দোলন নিয়ে বিরূপ ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যে প্রভাবিত ও অনুপ্রাণিত হয়ে ওবায়দুল কাদের, তাপস, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাছান মাহমুদ, মহিবুল হাসান, পলক, নুরুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল মামুন শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন। ছাত্রদের দমনে এসব আসামিদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তাদের প্রত্যক্ষ মদদে ও নির্দেশে নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন অর রশিদ, বিপ্লব কুমার ও হাবিবুর রহমান আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও পিওএম থেকে নিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা গত ১৫ জুলাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন, গুম, খুন করা শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা সূত্রাপুর থানাধীন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। তাদের সঙ্গে পুলিশ, আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিও চালানো হয়। এতে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকরাম হোসেন কাউসার ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের ওমর ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।