বরগুনার বেতাগীতে পাওনা টাকা চাওয়ায় মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের তীর বরগুনা সদর উপজেলার দক্ষিণ তেতুল বাড়িয়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা মৃত সাইদ আলীর ছেলে ও ঢাকার বাড্ডার বাটারায় বসবাসরত মো: সাইদুল ইসলাম মিলন (৩৫)‘র বিরুদ্ধে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পাওনা টাকা পরিশোধে ভ’ক্তভোগি ঢাকায় বসবাসরত বেতাগী পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা মৃত আ: হাকিমের ছেলে মো: দুলালের সাথে প্রতারণার আশ্রয় ও তাঁকে হয়রাণি করে আসছেন।
গত শুক্রবার বেতাগী লঞ্চ ষ্টেষনে এ ঘটনা ঘটে। থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সাইদুল ইসলাম মিলন খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক। সে গায়ের জোড়ে চলা ফেরা করে বেড়ায়। আইনআদালতের তোয়াক্কা করেন না। তিনি ঢাকায় মো: দুলালের মাল্টিপারপাস ও কোকোলা ডিলারশীপের ব্যবসা দেখাশুনা করতেন। মালিকের সরলতার সূযোগ নিয়ে অসাধূ উপায় অবলম্বন করে ব্যবসার সকল টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি মালিক টের পেয়ে রেজিষ্টার পত্র পর্যালোচনা করে দেখতে পান প্রতিষ্ঠান অনেক টাকা লাভে রয়েছে । পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে গত ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাউন্সিলর ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতে সব ডকুমেন্ট সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তার নিকট ২২ লক্ষ ৭৩ হাজার ৭৯০ টাকা পাওনার প্রমাণাদি মেলে। প্রথম কিস্তিতে ৪ লক্ষ পরবর্তীতে প্রতি মাসে ১ লক্ষ ৭০ হাজার করে টাকা করে ১২ মাসে সেই অর্থ পরিশোধের জন্য নির্দেশ ও পরামর্শ প্রদান করেন। কিন্ত দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও অধ্যাবধি কোন টাকা পরিশোধ করেননি। বরং মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ ও কথা বলার চেষ্টা করলেও দিনের পর দিন সে ফোন ধরেন না। সালিশ বৈঠকের কোন তোয়াক্কা করেন না। বাসায় গেলেও ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে বেড়ায়। ঘটনার দিন ভোর ৬ ঘটিকার সময় ভ’ক্তভোগি মো: দুলাল ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসার পথে রাজহংস -৮ লঞ্চের কেবিন হতে বেতাগী লঞ্চ ষ্টেষনে নামার সময় লঞ্চের নিচ তলায় তাকে দেখতে পেয়ে পাওনা টাকা চাইতে যাওয়ায় তিনি টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথারকাটাকাটি হয়।
ভ’ক্তভোগি মো: দুলাল অভিযোগ করেন, কথারকাটাকাটির এক পর্যায়ে সে হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর ও নীলাফুলা জখম করে। এসময় ঈদের মাকেটিং করা কাপড়ের ব্যাগ, ব্যাগে থাকা নগদ ২ লাখ টাকা, ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের গলায় থাকা আট আনা স্বর্ণের চেইন এবং ২০ হাজার টাকা মূল্যের পকেটে থাকা স্যামসাং মুঠোফোন নিয়ে যায় এবং বেশি ভাড়া-বাড়ি করলে তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ঐদিন মো: দুলাল বাদী হয়ে তিনি সহ ৪ জনকে আসামী করে তাঁদের বিরুদ্ধে বেতাগী থানায় অভিযোগ দায়ের করে। শুধূ একাই নয়, বরগুনার পৌর এলাকার স্বর্ণকার মিহির কর্মকার, ঢাকার বাসিন্দা মো: খাইরুল ইসলাম সহ তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক ব্যক্তি ও ঋনদান প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
২০১৪ সালে আমতলীতে নারী নির্যাতনের ঘটনায় সে হাতে-নাতে ধরা পড়ে। যার প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ঐ ঘটনায় সে বরগুনা থেকে পালিয়ে ঢাকায় ওঠে। ভ’ক্তভোগিদের অভিমত এটা এখন তার নেশা-পেশায় পরিণত হয়েছে। তাদের অভিযোগ টাকা চাইতে গেলে বরং সে উল্টে ভয় দেখিয়ে আসছেন। সমাজের সহজ-সরল নারী-পুরুষদের নতুন নতুন কৌশলের আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে আসছেন। এর পরেও ধরা-ছোয়ার বাইরে থাকছেন। ক্ষমা-ভিক্ষা চেয়েও পাওণা টাকা আদায়ে কিছুতেই তার মন গলাতে পারছেন না। তার এহোনো অনৈতিক কর্মকান্ডে একাধিক পরিবার আজ পথে বসেছে। তাঁরা এখন মানবেতর ও চরম অসহায়াত্বের মধ্যে জীবন যাপন করে আসছে। তবুও এসব অসহায় পরিবারের ফরিয়াদ ও কান্না কেউ শুনছেন না।
এ নিয়ে সাইদুল ইসলাম মিলনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয় বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন,অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।