প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সংসদে বলেছেন, বর্তমান সরকারের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের নিশ্চয়তা দেশ থেকে মেধা পাচার রোধ করছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে সিলেট-৩ আসন থেকে নির্বাচিত ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের মেধা পাচার রোধ করছে।”
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, সরকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করায় মেধাবীরা এখন দেশে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মেধাবীদের বিভিন্ন পুরস্কার, বৃত্তি/উপবৃত্তি প্রদান এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের যথেষ্ঠ মূল্যায়ন করছে। তিনি আরো বলেন, “স্ব স্ব ক্ষেত্রে মেধাবীদের মূল্যায়নে সরকারের পদক্ষেপ প্রশংসার দাবি রাখে।
বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে প্রকৃত অর্থে মেধা পাচার প্রতিরোধ করা একটি কঠিন কাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশের মেধা পাচার হচ্ছে। তিনি বলেন, “তবে সরকারের নিষ্ঠা, আন্তরিকতা এবং বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপের কারণে দেশের মেধা পাচার নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রয়েছে।”
সরকার প্রধান বলেন, মেধা পাচার নিরুৎসাহিত করতে তার সরকার মেধাবীদের বৃত্তি বা উপবৃত্তি প্রদান করছে, সকল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধাকে প্রাধান্য দিচ্ছে, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ অব্যাহত রাখতে মেধা পাচার প্রতিরোধ করা খুবই জরুরি।
শেখ হাসিনা বলেন, মেধাবী, দক্ষ ও উদ্ভাবনী মেধা সাধারণত কাঙ্ক্ষিত সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামোগত পরিবেশের অভাবে বিদেশে স্থানান্তরিত হয়, যা দেশের অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করে।
তিনি উল্লেখ করেন, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের মান, পরিবেশ, বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা, শিক্ষা, চাকরি এবং নাগরিকত্বের পাশাপাশি স্থায়ী বসবাসের সুযোগ মেধা পাচারের অন্যতম কারণ।
তিনি আরো বলেন, সরকার এ বিষয়ে সচেতন এবং সেজন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে মেধা পাচার প্রতিরোধের চেষ্টা করছে।
কিশোরগঞ্জ-৫ থেকে নির্বাচিত ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুশৃঙ্খল, নিরাপদ ও দায়িত্বশীল শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করতে সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
তিনি সংসদকে আরও জানান, বর্তমানে বিশ্বের ১৭৬টি দেশে ১ কোটি ৪৯ লাখের বেশি বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১২ বছরে পেশাদার, দক্ষ, আধা-দক্ষ এবং নিম্ন-দক্ষ ক্যাটাগরিতে প্রায় ৮১.৪৭ লাখ লোক বিদেশে চাকরি লাভ করেছে।
এছাড়া, জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন ও অভিযোজন কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রীকরণের কারণে গত ১২ বছরে প্রায় ১০ লাখ নারী শ্রমিক বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে।
চট্টগ্রাম-১১ থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম. আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বঙ্গোপসাগরে ৪৭৩ প্রজাতির মাছ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি নতুন প্রজাতি।
তিনি বলেন, ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে ১৫৪ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল শনাক্ত করেছেন, যার মধ্যে ২৭টি বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং গবেষণার মাধ্যমে ৬ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে।