শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান উপজেলা নির্বাচন: হরিরামপুরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে দেওয়ান সাইদুর মির্জাগঞ্জে পুলিশ কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন যে কোন দুর্যোগে পুলিশ জীবন বাজি রেখে সেবা প্রদান করছে : ডিএমপি কমিশনার নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি যে কোন মূল্যে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে : সিইসি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৩ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদন ঢাকার প্রত্যাখ্যান বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ তাড়াইলে দুই জুয়ারী গ্রেফতার

সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৫৯৪২ বার পঠিত

দেশে-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এই সুনাম আরও এগিয়ে নিতে হবে। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের মানুষ, শান্তি আর সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জানবে— এটিই আমার প্রত্যাশা।‘

রবিবার (১২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপতি প্যারেড-২০২১ এ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা তার দূরদর্শী চিন্তার মাধ্যমে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের উপযোগী উন্নত ও পেশাদার সশস্ত্র বাহিনীর অপরিসীম গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন। এ কারণেই একটি প্রশিক্ষিত, শক্তিশালী ও দক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুমিল্লা সেনানিবাসে ‘বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি’ এর শুভ উদ্বোধন করেন;  যা ছিল বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু নবীন সামরিক অফিসারদের পেশাগতভাবে দক্ষ, নৈতিক গুণাবলি সম্পন্ন এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গড়ে উঠার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই প্রাজ্ঞ, কালজয়ী ও দূর দৃষ্টিসম্পন্ন দিক নির্দেশনায় অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদারিত্ব এবং কর্মদক্ষতার সঙ্গে আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে বহির্বিশ্বেও তাদের অবদান রেখে চলেছে।

সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭৪ সালেই প্রণয়ন করেন আমাদের ‘প্রতিরক্ষা নীতি’। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতা প্রণীত সুদূর প্রসারী প্রতিরক্ষা নীতির আলোকেই সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’প্রণয়ন করেছে। আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নতুন নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছি। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীতে ৩টি নতুন পদাতিক ডিভিশন ও প্রথম প্যারা কমান্ডো ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক সাঁজোয়া যান এবং গোলন্দাজ কোরে মাঝারি ও দূরপাল্লার এমএলআরএস রেজিমেন্ট। আকাশ বিধ্বংসী স্বয়ংক্রিয় সোরাড, ভিসোরাড ও সর্বাধুনিক অরলিকন মিসাইল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আকাশ প্রতিরক্ষায় সূচিত হয়েছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। অত্যাধুনিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও সিগন্যাল সরঞ্জামাদি ছাড়াও বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হেলিকপ্টার, বিমান, মডার্ন ইনফ্যান্ট্রি গেজেট এবং আরও নানাবিধ অস্ত্র-সরঞ্জামাদি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সংযুক্ত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এসকল অস্ত্র-সরঞ্জামাদির জন্য প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও বিপুল সংখ্যক নতুন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও নানাবিধ অস্ত্র-সরঞ্জামাদি ও ভৌত কাঠামোর সংযোজন ও সম্প্রসারণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আজকের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যুদ্ধ সক্ষমতা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত, স্বয়ংসম্পূর্ণ, চৌকস এবং পেশাগতভাবে দক্ষ।

আওয়ামী লীগ সরকার নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেও নারীর অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন নারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই ২০০০ সালে সর্বপ্রথম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে নারী অফিসার নিয়োগ এবং ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম নারী সৈনিক ভর্তির যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। নেতৃত্ব ও যোগ্যতার ধারাবাহিকতায় আর্মি মেডিক্যাল কোরের একজন নারী অফিসারকে ‘মেজর জেনারেল’ পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি কোর্সের নারী কর্মকর্তাদেরও ‘লেফটেন্যান্ট কর্নেল’ পদে পদোন্নতি প্রদান, কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তিন জন নারী অফিসার ‘কন্টিনজেন্ট কমান্ডার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন।

বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিকে একটি অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন একাডেমিতে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি জানান, এখানে ক্যাডেটদের অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের সকল প্রকার অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হয়েছে।

নবীন অফিসারদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে, তোমরা এদেশের সন্তান; জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তোমাদের সকলকেই সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। যে কোনও দুর্যোগ ও দুঃসময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। তোমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি অনুগত এবং অধীনস্থদের প্রতি সহমর্মী হতে হবে। মনে রাখবে, অনেক রক্ত আর ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই স্বাধীনতা। কষ্টার্জিত এই স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করা তোমাদের পবিত্র দায়িত্ব।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..