মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন

শান্তি মিশনে র‍্যাবকে নিষিদ্ধের দাবি ১২ সংস্থার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোডের সময় : রবিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৫৮৯৯ বার পঠিত

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে র‍্যাপিড একশান ব্যাটালিয়ন এর সদস্যদের নিষিদ্ধ করা যৌথ দাবি করেছে আন্তর্জাতিক ১২ টি মানবাধিকার সংস্থা ।

এ ব্যাপারে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যা পিয়েরে ল্যাকরোইক্সকে সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে যৌথভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ )ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

সংস্থা গুলোর চিঠিতে বলা হয়েছে – বাংলাদেশের বিশেষায়িত বাহিনী র্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে ।এজন্য জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিভাগ এর উচিত রেপ সদস্যদের শান্তিরক্ষা মিশনে নিষিদ্ধ করা ।

গত বছরের ৮ নভেম্বর জ্যা পিয়েরে ল্যাকরোইক্সকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। তবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তৃপক্ষ এখনো এর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছে অ্যামেনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স ( আফাদ) , এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম- এশিয়া), এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন , এশিয়ার নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস ( আনফ্রেল ), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, সিভিকাস : ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন , হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, রবার্ট এফ, কেনেডি হিউম্যান রাইটস, দেয় অ্যাডভোকেটস ফর হিউম্যান রাইটস, ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার (ওএমসিটি )।

ওই চিঠিতে আরো বলা হয় – ২০০৪ সালে র‍্যাব গঠনের শুরু থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত র‍্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত, হত্যাকান্ড, নির্যাতন ,জোরপূর্বক গুম করে দেওয়ার বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে ।

সংস্থাগুলো বলেছে, ধারাবাহিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অপরাধ করে এলো বাংলাদেশ সরকার র‍্যাব সদস্যদের পুরস্কৃত করেছে ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠাচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর সাড়ে ৬ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ওই ১২ সংস্থাগুলো বলেছে, ২০১২ সালে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জেডিসি দিয়েছিল তা জাতিসংঘ মিশনে আসা বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে না।

বাংলাদেশ থেকে আসা  র‍্যাব সদস্যদের বিষয়ে কোনো যাচাই না করে তাদের শান্তিরক্ষা মিশনের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শান্তি রক্ষা মিশনে কাউকে নিয়োগ দেওয়ার আগে যাচাই পদ্ধতি চালু করা উচিত। যেখানে বিচারবহির্ভূত, হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।

এইচআরডব্লিউ বলেছে – বাংলাদেশ সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার পরবর্তীতে মানবাধিকার রক্ষাকারী এবং ভুক্তভোগীদের পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা রবার্ট এফ.কেরি কেনেডি হিউম্যান রাইটস এর প্রেসিডেন্ট কেনেডি বলেছেন, শান্তিরক্ষীদের মাধ্যমে মানব অধিকার হরণের অবসরের বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তরিক হয়ে থাকলে যাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ রয়েছে তাদের বাদ দেওয়া তাকে নিশ্চিত করতে হবে।

কেরি কেনেডি আরো বলেন, প্রমাণ- স্পষ্ট এখন জাতিসংঘের দাগ কেটে দেওয়ার সময়। কনভেনশন অ্যাগেইন্সট টর্চারের অধীনে বাংলাদেশে ২০১৯ সালের পর্যালোচনা করা হয়। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান,র‍্যাব সদস্যদের শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েন করার বিষয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরিচালক লুইস চার্চন বলেছেন, শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্যদের মোতায়নের জাতিসংঘের নীতিমালা অনুযায়ী হতে পারে না। এতে শান্তি রক্ষা মিশনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যা দেখা দিতে পারে।

তিনি আরো বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী কোন ইউনিট জাতিসংঘের অংশ হতে পারে না। এ ব্যাপারে সেনা প্রেরণকারী দেশ গুলোর কাছে জাতিসংঘের উচিত স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দাও।

এর আগে গত বছরের ১০ ডিসেম্বরে র‍্যাবের ৭ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। র‍্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

র‍্যাবের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সে ঘটনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শেষ হতে না হতেই এবার পুরো বাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের কাছে চিঠি দিয়েছে সংস্থাগুলো।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..