শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ইউনূস-মোদি বৈঠক হতে পারে নভেম্বরে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দক্ষিণ আমেরিকায় বিরল ‘অগ্নিবলয়’ তৈরি করবে সূর্যগ্রহণ তাড়াইলে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রেফতার পদ্মায় অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান জোরপূর্বক জমি দখলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন,কান্নায় ভেঙে পড়ে ভুক্তভোগী পরিবার বামনায় শিক্ষকদের ১০ম ও ৯ম গ্রেডের দাবীতে মানববন্ধন পটুয়াখালীতে সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচী শুরু মুরাদনগরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু বামনায় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানহানী মামলা প্রত্যাহারের দাবী ডিআরইউর

চরফ্যাশনের তারুয়াদ্বীপ হতে পারে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন কেন্দ্র

সাব্বির আলম বাবু (ভোলা, ব্যুরো চিফ):
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০২২
  • ৬১২৯ বার পঠিত
চরফ্যাশনের তারুয়াদ্বীপ হতে পারে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন কেন্দ্র

সাব্বির আলম বাবু (ভোলা, ব্যুরো চিফ):

দ্বীপজেলা ভোলার একমাত্র সমুদ্র সৈকত তারুয়াকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারণে তা হয়ে উঠছে না। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটকরা সেখানে যেতে পারছেন না। যারা যাচ্ছেন তারাও জীবনের ঝুঁকিসহ নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। অথচ পর্যটন মন্ত্রণালয় কিংবা স্থানীয় প্রশাসন একটু উদ্যোগ নিলে পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতটিতে অনায়াসেই যেতে পারেন। জেলা শহর থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরে এই তারুয়া সমুদ্র সৈকতের অবস্থান। একশত পয়ত্রিশ কিলোমিটার পাকা সড়কের পর পনেরো কিলোমিটার নৌ-পথ পেরিয়ে সেখানে যেতে হয়। তারুয়া সমুদ্র সৈকতে পর্যটকরা একই সঙ্গে উপভোগ করতে পারেন বিশাল সমুদ্রের বিস্তীর্ণ জলরাশি, নানা জাতের পাখিদের কল-কাকলি, বালুকাময় মরুপথ আর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের ছায়াঘন মনকাড়া নিবিঢ় পরিবেশে সময় কাটানোর সুযোগ, বৈচিত্রময় প্রাণী আর সাগরের উত্তাল গর্জন সব মিলিয়ে মায়াবী হাতছানী। প্রকৃতি যেন নিজ হাতে দ্বীপটিকে সাজিয়ে তুলেছেন। তবে সেখানে এখনো গড়ে উঠেনি মানুষের বসবাস। এখানে হরিণ ও ভাল্লুকসহ নানা প্রাণী ও দৃষ্টিনন্দন মাটি রয়েছে। সবুজ বৃক্ষের সমারোহ আর পাখিদের কলরবে মুখরিত তারুয়া দ্বীপ পর্যটন এলাকা হিসেবে গুরুত্বের দাবী রাখে। কিন্তু তারুয়া সমুদ্র সৈকতের এই প্রাকৃতিক রূপ-সৌন্দর্যের কথা দেশবাসী তো দুরের কথা ভোলার বহু মানুষের কাছে এখনও অজানা।
স্থানীয় সাংবাদিক এডভোকেট নজরুল হক অনু বলেন, এখানে একটি সুন্দর সমুদ্র সৈকত আছে, আপনারা আসুন দেখে যান, কুয়াকাটা কিংবা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের চেয়ে এই সমুদ্র সৈকতটি কোন অংশে কম নয়। ঘুরতে আসা পর্যটক জান্নাত বলেন, এই প্রথমবারের মত চরফ্যাশনের ঢালচরের তারুয়ায় এখানে আসলাম। এই অঞ্চলটা খুবই চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এই পর্যটন কেন্দ্রটি বাংলাদেশের তৃতীয় সমুদ্র সৈকত হতে পারে। সমুদ্র সৈকতটিতে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত কোন নৌ-যান নেই। বিশেষ ব্যবস্থায় কিংবা রিজার্ভ করা স্পীড বোট, ট্রলার বা ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া করে সৈকতে যেতে হয় পর্যটকদের। সৈকতে নামার জন্য কোন পন্টুন বা টার্মিনাল নেই সেখানে। যে কারণে পর্যটকরা সেখানে যাবার প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যেতে পারছেন না। যারা এই কঠিন বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে প্রকৃতির টানে সেখানে যান, গিয়ে মুগ্ধ হন ঠিকই কিন্তু নিরাপত্তাসহ সুপেয় পানি বা বিশ্রামাগারের অভাবে চরম বিড়ম্বনার শিকার হন। খেয়াঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহিদা আক্তার সুমনা বলেন, এই জায়গাটা খুবই সুন্দর, কিন্তু আসতে কষ্ট হয়েছে। ট্রলারে সয়ম লেগেছে ২ ঘণ্টা। যদি এখানে একটি সি-ট্রাক থাকত তাহলে খুব ভাল হতো। এখানে এসে বুঝতে পারলাম তারুয়া দ্বীপটি কক্সবাজারের চেয়ে অনেক সুন্দর। অপর দর্শনার্থী বলেন, এখানে এসেছি ঘুরতে। সব কিছুই আছে কঙবাজারের মত। এখানে পানির অভাব, থাকার ব্যবস্থা নাই, পুলিশ প্রশাসনের কোন ব্যবস্থা নাই। আরেক দর্শনার্থী আনোয়ার পারভেজ বলেন, এখানে যদি হোটেল-রেস্তোরাঁ থাকতো তাহলে মানুষ এখানে এসে ৫-৬ দিন থাকতে পারতো। সংগীত শিল্পী মনজুর আহমেদ বলেন, জায়গাটা সত্যিই সুন্দর। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে এখানে আরো বেশি পর্যটক এসে ভীড় জমাবে। এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দারাও দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে তারুয়া সমুদ্র সৈকতটিকে একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণার দাবী জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। তারা জানান, পর্যটন কেন্দ্র করার জন্য একটি টার্মিনাল, একটি পুলিশ ফাড়ি, একটি রেস্ট হাউজ প্রয়োজন। তাহলে আমাদের এলাকা উন্নত হবে। আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবী করছি, ঢালচরের হাজারো মানুষের প্রাণের দাবী। আজকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়, তাদের মত করে আমাদের এই এলাকাটা যেন পর্যটন এড়িয়া হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মাহাবুবুর রহমান বলেন, ভোলার দক্ষিণের সর্বশেষ এ অঞ্চলটি হচ্ছে তারুয়া। এরপরে আর কোন দ্বীপ নেই। এ সমুদ্র সৈকতটিকে ঘিরে করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। এদিকে, প্রকৃতির রূপ আলো আধারির বাহারী খেলার দেখা মেলে এখানে। তারুয়ায় দাঁড়িয়ে ভোরের সূর্যের আগমনী বার্তা দেখা যায়। পাশাপাশি সন্ধ্যার আকাশে সিঁড়ি বেয়ে এক পা দু’পা করে লালিমায় ভরে ওঠার সেই অতুলনীয় দৃশ্যও দেখা যায়। পর্যটক আর ভ্রমন পিপাসু মানুষকে মুগ্ধতার বন্ধনে আবদ্ধ করার যাদুকরি শক্তি রয়েছে তরুয়া দ্বীপের। তরুয়ায় শীতকালে ভিন্ন মাত্র যোগ করে সুদুর সাইবেরিয়া থেকে ছুটে আসা অতিথি পাখি। তখন পাখিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয় এ দ্বীপ। যদিও সরকারীভাবে তারুয়া সমুদ্র সৈকতটিতে পর্যটন সুবিধা নিশ্চিত করা সময় সাপেক্ষ। তবুও পর্যটকরা যাতে করে সেখানে গিয়ে অন্তত বিশ্রাম নেয়াসহ সু-পেয় পানি পেতে পারে সেজন্য ভোলার জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..