মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কিসমতপুর গ্রামের মো. খোকন খন্দকারের বাড়ির সামনে পাচঁ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা একটিমাত্র সাঁকো প্রতিদিন কয়েকহাজার মানুষের এ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয় যার কারনে যে কোন সময় দূর্ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
যুগের স্রোতে বিভিন্ন জনপদের চেহারা পাল্টালেও প্রায় এক যুগেও এখানে বাঁশের সাঁকোটির স্থানে নির্মিত হয়নি কোন ব্রিজ। সম্প্রতি কিসমতপুর খাটাসিয়া গ্রামীণ সড়কটি পাঁকা হলে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হলেও একটি ব্রিজের অভাবে কেওয়াবুনিয়া, ভয়াং, ঝোপখালী, চালিতাবুনিয়া ও কিসমত খাটাসিয়াসহ ৫টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
একটি সেতুর জন্য দ্বিখণ্ডিত হয়ে আছে দক্ষিণ কেওয়াবুনিয়া ও কিসমত খাটাশিয়াসহ ৫ গ্রামের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এতে বর্ষার সময়ে সাঁকো দিয়ে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ প্রায় পাঁচ গ্রামের পথচারীরা। খালের ওপর সংযোগ সেতু না থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরেও বিদ্যালয় সংলগ্ন পাঁচকড়ি খালের উপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংযোগ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণকে চলাচল করতে হচ্ছে।
বাঁশের সাঁকো পার হয়ে শিংবাড়ি, কাকড়াবুনিয়া, গাবুয়া ও গাজীপুরা বাজার, কিসমত খাটাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেলোয়ার হোসেন কলেজ, পশ্চিম কাকড়াবুনিয়া গালর্স স্কুল, গাবুয়া জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উপজেলা সদর হাসপাতালে এই বাঁশের সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিমপতপুর গ্রামের পাঁচকরী খালের উপর গ্রামবাসীদের উদ্যোগে সুপারি ও বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয় প্রায় এক যুগ আগে। এর আগে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হত এ এলাকার মানুষ। উপজেলার কিসমত খাটাসিয়া গ্রামের পাঁচকড়ি খালের ওপর ব্রিজ না থাকায় দু’পারের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো: জাহিদ হোসেন ও নয়ন কবিরাজ বলেন, এ গ্রামে পাঁকা সড়ক নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু এখানে ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ার অভাবে শিক্ষা, চিকিৎসা ও কৃষি ক্ষেত্রেও গ্রামের লোকজনকে নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এ নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, কৃষক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, হাট-বাজারের লোকজন পারপার হচ্ছে।
কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক মহিলা মেম্বার মোসা. ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, পাঁচকরি খালের ওপর সাঁকো দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকে। অনেক সময়ে পথচারীরাসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সাঁকো পারাপারে পা ফসকে খালে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। নির্বাচনের সময়ে প্রার্থীরা সবাই এখানে সাঁকোর পরিবর্তে ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দেন। কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে আমাদের কথা কেউ মনে রাখে না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে লোকজন এসে ৭-৮ বছর আগে পরিদর্শন করেন এবং সাঁকোটি মেপে গেছেন। অথচ কয়েক বছর হয়ে গেলেও ব্রিজ আর নির্মাণ হয়নি। এখানে একটি ব্রিজটি নির্মিত হলে এ এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. আশিকুর রহমান জানান, সাঁকো পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সরেজমিনে পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।