বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
মুরাদনগরে শিক্ষার্থীদের মামলা প্রত্যাহার ও শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন পরকীয়া সন্দেহ ও অর্থ লোভের কারণে মাহমুদার সংসারে অশান্তি বামনায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ একটি ভিন্ন গণতান্ত্রিক সংসদের রূপকল্প : মজিবুর রহমান জামায়াতে ইসলামী পলাশবাড়ী উপজেলা শাখা’র উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত নওগাঁয় আলু ভোক্তাদের কাছে পৌঁছতে কেজি’তে ব্যবধান ১০ থেকে ১৫ টাকা দক্ষিণ কোরিয়াকে বস্ত্র-পাট ও জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান বস্ত্র উপদেষ্টার শিগগিরই অবশিষ্ট ৩২ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হবে বাংলাদেশে আরো বেশি সৌদি বিনিয়োগের আহ্বান ড. ইউনূসের বিমসটেককে যুব, পরিবেশ, জলবায়ু সংকটের দিকে বেশি নজর দিতে হবে: অধ্যাপক ইউনূস

দলিল যার, জমি তার: সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল, ২০২৩’ পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৫৮৫৭ বার পঠিত

দলিল যার, জমি তার অর্থাৎ দখলে থাকলেই হবে না, জমির দলিলসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও থাকতে হবে, এই বিধান রেখে জাতীয় সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল, ২০২৩’ পাস হয়েছে।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী আজ জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন এবং ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে কণ্ঠভোটে এটি পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।

দখলে থাকলেই মালিক নয়, থাকতে হবে দলিলসহ জমির প্রয়োজনীয় দস্তাবেজ। অন্যের জমি নিজের দখলে রাখা, ভুয়া বা মিথ্যা দলিল তৈরি এবং নিজ মালিকানার বাইরে অন্য কোনও জমির অংশ বিশেষ উল্লেখ করে দলিল হস্তান্তরে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের বিধান রেখে এই নতুন আইনটি করা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, ভূমি হস্তান্তর, জরিপ ও রেকর্ড হালনাগাদে অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার, তথ্য গোপন করে কোনও ভূমির সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষ কারও কাছে হস্তান্তর, ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে জমি হস্তান্তর ও মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোনও দলিলে সই করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড।

বিলে বলা হয়, কোনও দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে দলিলের কোনও অংশ কাটা বা পরিবর্তন করলে তার সাজাও হবে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড। সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনও মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করার সাজাও একই। এছাড়া প্রতারণামূলকভাবে কোনও ব্যক্তিকে কোনও দলিলে সই বা পরিবর্তনে বাধ্য করার ক্ষেত্রেও একই সাজা ভোগ করতে হবে।

নতুন আইন অনুযায়ী সর্বশেষ খতিয়ান মালিক বা তার উত্তরাধিকার সূত্রে বা হস্তান্তর বা দখলের উদ্দেশ্যে আইনানুগভাবে সম্পাদিত দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে কোনও মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনও ব্যক্তি ওই ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। অবৈধ দখলের সাজা হবে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড।

আইনে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তির নামে স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টিন্যান্সি অ্যাক্টের অধীনে প্রণীত বা হালনাগাদকৃত বলবৎ সর্বশেষ খতিয়ান না থাকলে এবং খতিয়ান ও হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হলে তিনি ওই জমি বিক্রি, দান বা হেবা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন বা দলিল নিবন্ধন করতে পারবেন না।
বিলে আরও বলা হয়, কোনও ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া আবাদযোগ্য জমির উপরি স্তর কাটলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড। বিলে উল্লেখ আছে, যদি কোনও ব্যক্তি এই আইনে বর্ণিত কোনও অপরাধ সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচনা দিলে মূল অপরাধীর সমান দন্ডে দন্ডিত হবেন।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমির স্বত্ব সংরক্ষণ ও শান্তিপূর্ণ ভোগদখল বজায় রাখার লক্ষ্যে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ এবং দ্রুত প্রতিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এই আইন করা হচ্ছে। নাগরিকদের নিজ নিজ মালিকানাধীন ভূমিতে নিরবচ্ছিন্ন ভোগদখল অধিকারগুলো নিশ্চিতকরণ, ভূমি বিষয়ক প্রতারণা ও জালিয়াতির ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত ও প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি ও সর্বসাধারণের  প্রতিরোধ ও দমনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, ভূমি সংক্রান্ত কিছু অপরাধের দ্রুত প্রতিকারের ব্যবস্থার লক্ষ্যে এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ভূমি হতে বে-আইনি দখল, স্থাপনা ব প্রতিবন্ধকতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অবৈধভাবে ভরাটকৃত মাটি, বালু, ইত্যাদি অপসারণ করতে এবং ওই ভূমিকে এর আগের শ্রেণি বা প্রকৃতিতে পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা সন্নিবেশ করা হয়েছে। ভূমি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা দূরীকরণ এবং যথাসময়ে জনগণের বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং মাঠ পর্যায়ের মতামত গ্রহণসহ অংশীজনের মতামত গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে প্রস্তাবিত ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ প্রণয়ন করা হয়েছে।

বিল পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলীয় সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, রুস্তম আলী ফরাজী, ফখরুল ইমাম, শামীম হায়দার পাটোয়ারি, বেগম রওশন আরা মান্নান, পীর ফজলুর রহমান এবং গণফোরামের মোকাব্বির খান।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..