শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
তাড়াইলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র ও বিএনপি সমার্থক শব্দ : বিএনপি মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টার সাথে নেপালের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ জনগণের সঙ্গে থেকে বিশ্বাস ও ভালোবাসা অর্জন করুন : তারেক রহমান জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে একশ’ কোটি টাকার অনুদান ২শ’ কোটি ডলারের বেশি নতুন সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকর পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মহাসড়ক যেন মরণ ফাঁদ, দেখার যেন কেউ নেই মুরাদনগরে গোমতীর নদীর পানি কমার সাথে সাথে ভাঙনে দিশেহারা মানুষ মির্জাগঞ্জে ইউপি সদস্যের দাপট পটুয়াখালী লাউকাঠীতে যুবদলের নেতার বসত বাড়িতে হামলা, লুটপাটের অভিযোগ

তাড়াইলে বিপন্ন জলাধার: সমাধান কোথায়?

লেখক: এডভোকেট মাহমুদুল হাসান মাসুম, জজকোর্ট, ঢাকা:
  • আপলোডের সময় : শনিবার, ১ জুন, ২০২৪
  • ৫৭৮৩ বার পঠিত

লেখক: এডভোকেট মাহমুদুল হাসান মাসুম, জজকোর্ট, ঢাকা:

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার পুরাতন ডাক বাংলা কার্যালয়ের সামনে, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ সড়কের পাশে নদী ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। এতে বিপন্ন হচ্ছে জলাধার।

নদী-নালা, খাল-বিলের মতো বহু জলাভূমি রয়েছে বাংলাদেশে।

দেশের ৭ থেকে ৮ লাখ হেক্টর ভূমি কোনো না কোনোভাবে জলাভূমির অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু এসব ভরাটের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও নগরের ভারসাম্য ব্যাহত হচ্ছে।

গত রবিবার (২৬মে) রাজধানীতে ‘আমাদের কৃষি, প্রকৃতি, জলাভূমির সুরক্ষা এবং নদী দখলদারি প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় জলাধার সংরক্ষণ বিষয়টি নতুন করে উঠে এসেছে। বক্তারা বলেন, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরাই নদী, বন, জলাভূমি দখল করে। এগুলোর আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) তথ্য বলছে, সারাদেশে প্রতি বছর ৪২ হাজার একর কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট হচ্ছে। ১৯৯৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে ৫ হাজার ৭৫৭ একর জলাভূমি ভরাট হয়েছে। এর ফলে জলাভূমির ওপর নির্ভরশীল মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নদী, খাল, বিল, পুকুর ইত্যাদি পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া চারপাশের বাতাসকে শীতল রাখা, বর্ষা মৌসুমে বন্যা প্রতিরোধ, শহরে জলাবদ্ধতা নিরসন, পানির চাহিদা পূরণ ও আবর্জনা পরিশোধনে জলাভূমিগুলোর গুরুত্ব অনেক। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ এর ধারা ৫ অনুযায়ী, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না।

এ ধরনের জায়গার অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তরও করা যাবে না। একই আইনের ধারা ৮(১)-এ বলা হয়েছে, কেউ এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে। এছাড়া উচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত করারও বিধান রয়েছে। ধারা ৮(২) ও ৮(৩)-এ এ ধরনের কারাদণ্ডের জন্য শাস্তি এবং নিজ খরচে সেটা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। ২০১৪ সালের ৬ মে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব খাল, খেলার মাঠ ও পার্ক রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত দুটি করে খেলার মাঠ থাকার কথা রয়েছে। সব ধরনের আইন-কানুন ও আদালতের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে খেলার মাঠ দখল চলছেই। এছাড়া সারাদেশেই নদী-খাল দখল-দূষণের মহোৎসব চলছে। চর পড়ে এবং দখল-দূষণের কারণে দেশের নদী-খালগুলো এখন মৃতপ্রায়। হারিয়ে যাওয়ার পথে বহু নদী-খাল-জলাশয়। যখন যেভাবে প্রয়োজন তখন সেভাবে নদী-খাল-জলাশয় ব্যবহার করা হচ্ছে। ভরাট করে দখল করার উৎসবে মেতে উঠেছে প্রভাবশালীরা। সারাদেশ যেন এখন নদী-খাল-জলাশয় বৈরী দেশে পরিণত হয়েছে। একের পর এক জলাভূমি হারিয়ে যাওয়া মানে জেনেবুঝে দেশের ক্ষতি ডেকে আনা। তাই জলাভূমি রক্ষায় প্রচলিত আইনের প্রয়োগ ঘটাতে হবে। জলাধার রক্ষা সরকারের দায়িত্ব। স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে জলাভূমিগুলো সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার কথা গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..