শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
যে কোন দুর্যোগে পুলিশ জীবন বাজি রেখে সেবা প্রদান করছে : ডিএমপি কমিশনার নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি যে কোন মূল্যে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে : সিইসি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৩ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদন ঢাকার প্রত্যাখ্যান বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ তাড়াইলে দুই জুয়ারী গ্রেফতার তাড়াইলে সারসহ উফশী ও আউশ ধান পাচ্ছে ৭৫০ জন কৃষক মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের উপজেলা নির্বাচনে কোন অনিয়ম সহ্য করা হবে না : চট্টগ্রামে ইসি আনিছুর

বগুড়ায় বাশ শিল্পকে আকড়ে ধরে জীবন চলে দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর

এনামুল হক রাঙ্গা: (বগুড়া প্রতিনিধি):
  • আপলোডের সময় : মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৫৮৭৩ বার পঠিত
ছবি দুপচাচিয়া ধাপের হাট ।

গ্রামীন জনপদে বাঁশ থেকে তৈরি করা বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিত্য ব্যবহার করে থাকেন বিশাল জনগোষ্ঠী।   জীবনের চলার পথে সমাজ সংসারের বাকে বাকে এই সব বাঁশের তৈরি জিনিস জড়িয়ে আছে গ্রামীন জনপদের মানুষের ।দৈনন্দিন জীবনে বাশের তৈরি এসব পণ্যের বিকল্প এখনো তেমন চোখে পড়েনা। তারপরও যুগে যুগে গ্রামগঞ্জে প্রচুরসংখ্যক মানুষ সাংসারিক প্রয়োজনে এমন বাঁশ দিয়ে বানানো পণ্য  ব্যবহার করে যাচ্ছেন হরহামেশাই।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে থাকা বাঁশ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে এখনো জীবন ধারণ করছে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ধাপের হাটের অর্ধশতাধিক পরিবার। বাঁশ থেকে তৈরি ডালা, কুলা, চালুন, খইচালা, জালি, ঝাপনি, চাঙ্গারি, বাচ্চাদের ছোট কুলাসহ হরেক রকমের পণ্য হাটে হাটে বিক্রি করে নিজেদের যেমন বাঁচিয়ে রেখেছেন, ঠিক তেমনি দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে টিকেয়ে রেখেছেন পরিবারগুলো।
জানা যায়, অতীতে গ্রামে-গঞ্জে বাঁশের তৈরি পণ্যসামগ্রীর কদর ছিল অনেক। এসব পণ্য শোভা পেত প্রত্যেক বাড়িতে। অতীতে বাঁশের তৈরি তৈজসপত্রই ছিল সংসারের মূল ভরসা। কিন্তু কালক্রমে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাঁশ শিল্পে ভাটা পড়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ শিল্প।কিন্তু পূর্ব পুরুষের ব্যবসাকে এখনো ধরে রেখেছেন বগুড়া  জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার কিছু মানুষ। বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ধাপের হাট এলাকায় গ্রামের নারী পুরুষ মিলিয়ে তৈরি করছেন বাঁশের তৈজসপত্র।

বাঁশ শিল্পের কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের পুরুষরা বিভিন্ন বাগান থেকে ভালো ও লম্বামানের বাঁশ সংগ্রহ করে। পরে সেই বাঁশ প্রথমে চেছে পণ্যের আকার অনুযায়ী কেটে নেয়। কেটে নেওয়া অংশ থেকে বাঁশের পাতলা ও চিকন চাচ তৈরি করে তা দিয়ে ডালা, কুলা, চালুনসহ বিভিন্ন কিছু তৈরি করে। একজন কারিগর দিনে ৪ থেকে ৫টি বড় মাপের ডালি তৈরি করতে পারে। পাইকারদের কাছে এই ডালা বিক্রি করেন ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে। আর খোলা বাজারে এই ডালা বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

ধাপেরহাট এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ভোরের আকাশ কে  বলেন, বাঙালির ঐতিহ্য এসব পণ্য এখনো এলাকার ঘরে ঘরে ব্যবহার হয়ে আসছে। বাঁশের তৈরি বাহারি পণ্যও বেচাকেনা হয়ে থাকে ভালো।

বাঁশ শিল্পের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম ভোরের আকাশ কে  জানান,  দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসা শুরু করছেন। প্রতি হাটে ৭-৮ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন। এছাড়াও গ্রামে ফেরি করে বাঁশের তৈরি এসব পণ্য বিক্রি করেন। তাতে তার ভালো আয় হয়। গড়ে মাসে তিনি ১ লাখ ১০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন।

হাটের আরেক ব্যবসায়ী মো. সাব্বির হাসান ভোরের আকাশ কে  বলেন , ধাপের হাটে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বাঁশের তৈরি পণ্যের ব্যবসা করছেন। এখানে প্রতিটি পণ্য যেমন-প্রতি পিস ডালা বিক্রি হয় ৭০ টাকা, কুলা ১০০ টাকা, চালুন ৮০ টাকা, ডালি ১০০ টাকা, ঝাঁপি ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকা খুচরা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এই হাটে প্রচুর ক্রেতা আসেন। তারা তাদের চাহিদামতো পণ্য কিনে থাকেন।

হাটে বাঁশের তৈরি পণ্য কিনতে আসা তালেব আলী জানান, পরিবারে সারা বছরই বাঁশের তৈরি পণ্য ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে প্লাস্টিকের পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে। আমাদের স্বার্থেই পরিবেশবাধন্ধব এই শিল্পকে ধরে রাখতে হবে।

জেলার বাশ শিল্পের সবচেয়ে বিখ্যাত হাট বলা হয়ে থাকে দুপচাচিয়ার ধাপের হাটকে। শুধু ধাপের হাট নয় জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাট বাজার গুলোতে কমবেশি বাশের তৈরি তৈজসপত্র পাওয়া যায়।

দয়া করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর..