মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য কথাটি চিরন্তন সত্য হলেও প্রকৃতপক্ষে এ মর্মবাণী ধারণ করেন খুব কম সংখ্যক মানুষই। কেননা ভার্চুয়াল দুনিয়া ও মানুষের কর্মব্যস্ততা মানুষকে তার মানবিক কর্মকান্ড থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। মানবিক মানুষের কার্যক্রমের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে পারে সমাজ, গ্রাম কিংবা অঞ্চল।
প্রতিদিনই বেড়েই চলেছে শীতের তীব্রতা। প্রচণ্ড শীতে নিরুপায় অসহায়, দুস্থ মানুষরা। শীত নিবারণের জন্য নাটোরে কম্বল নিয়ে এসব অসহায়, দরিদ্র্ শীতার্তের মানুষের কাছে যাচ্ছেন সামাজিক উদ্যোক্তা শেখ রিফাদ মাহমুদ।
রিফাদ তার বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে মাঘ মাসের হাড়কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে ঘুরে ঘুরে প্রতিবন্ধী ও শীতার্তদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন শীতবস্ত্র। রিফাদের উক্ত সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে এলাকাবাসীদের কাছে।
এসআরআই ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ রিফাদ মাহমুদ বলেন, শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সকলের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। সরকারের পাশাপাশি বিত্তবান মানুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই শীতের কষ্ট থেকে দরিদ্র মানুষদের রক্ষা করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, শুধু নিজ স্বার্থ রক্ষা না করে অসহায় মানুষের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে হবে। মানবিক কাজের মাধ্যমেই আত্মতৃপ্তি পাওয়া সম্ভব।
ছোটোবেলা থেকেই রিফাদের সামাজিক কার্যক্রমে পথচলা। মানবিক সমাজ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে নীরবে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া শিক্ষার্থী শেখ রিফাদ মাহমুদ। জাতিসংঘ প্রণীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে অবদান রাখতে কাজ করছেন তিনি। শিশুদের শিক্ষা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা-উপকরণ ও নতুন জামা-কাপড় বিতরণ, বিভিন্ন দুর্যোগ ও উৎসবে খাদ্য সহায়তা করে থাকেন তিনি। প্রথমে রিফাদ নিজের টিফিন এবং হাত খরচের টাকা জমিয়ে দরিদ্র শিশুদের লেখাপড়ার জন্য বইখাতা, জামা-কাপড় ও খাবার কিনে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন; তারপর এসআরআই ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বৃহৎ আকারে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তিনি।
বর্তমানে শেখ রিফাদ মাহমুদ বেলজিয়ামে প্রতিষ্ঠিত বৈশ্বিক ছাত্র সংগঠন গ্লোবাল স্টুডেন্ট ফোরামের উপদেষ্টা পর্ষদ সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২০সালে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে কমনওয়েলথ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, অল-আফ্রিকা স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, ইউরোপিয়ান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, অর্গানাইজিং ব্যুরো অফ ইউরোপিয়ান স্কুল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন এর সমন্বয়ে গ্লোবাল স্টুডেন্ট ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সংগঠনটি ১২২টি দেশের ২০২টি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করছে।